ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ছাঁটাইয়ের খবর আসছে রোজ প্রতিদিনই। কোন কোম্পানি কত ছাঁটল, চলছে জোর জল্পনা। এর মধ্যে এবছর ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে আরও বিপুল কর্মী ছাঁটাইয়ের পূর্বাভাস পাওয়া গেল। মন্দার জেরে চলতি বছরে ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি প্রায় ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করতে পারে। সোমবার এমনই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন এই শিল্পক্ষেত্রের বর্ষীয়ান ব্যক্তিত্ব টিভি মোহনদাস পাই। এক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির মধ্যস্তরীয় কর্মীদের ওপরে সর্বাধিক কোপ পড়তে চলেছে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছেন তিনি।
তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পক্ষেত্রে এই ধরনের কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রবণতাকে স্বাভাবিক বলেই মনে করেন ইনফোসিসের প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক আধিকারিক (CFO) পাই। এক্ষেত্ৰে তাঁর ব্যখ্যা, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে অগ্রগতির হাত ধরে প্রতি ৫ বছরে একবার এমন পরিস্থিতি আসে।
মোহনদাস পাইয়ের কথায়, ‘কোনও শিল্প সংস্থার অগ্রগতি ঘটলে মধ্যবর্তী স্তরের বহু কর্মী উদ্বৃত হয়ে পড়েন। কারণ তাঁরা যে পরিমাণে বেতন পান তার সম পরিমাণে পরিষেবা দিতে পারেন না। পশ্চিমের দেশগুলির পাশাপাশি ভারতেও এটা সমানভাবে সত্য।’
অটোমেশন এবং বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নিম্নগতির জেরে আগামী ৩ বছরে ২ লক্ষ তথ্যপ্রযুক্তি ইঞ্জিনিয়ার চাকরি হারাতে পারেন বলে আগেই একটি রিপোর্টে জানিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির বণিকসভা Nasscom। গত ফেব্রুয়ারি মাসে Nasscom India Leadership Forum-এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে McKinsey & Company। যেখানে বলা হয়েছে, আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে IT ক্ষেত্রে অর্ধেক ওয়ার্কফোর্সের কাজ থাকবে না। তাদের দরকার পড়বে না।
এদিকে, কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে পথে নামছেন কর্মীরাও। সোমবার তথ্যপ্রযুক্তি তালুক সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে বিক্ষোভ মিছিল করল অল ইন্ডিয়া আইটি অ্যান্ড আইটিইএস এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন। তাদের এই আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে বাম যুব সংগঠন DYFI। সিপিএমের যুব সংগঠন DYFI এর অভিযোগ, মন্দার বাজার হলেও বিভিন্ন কোম্পানি শুধু কর্মীদের ছাঁটাই করেই কস্ট কন্ট্রোলের চেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ তাদের মুনাফা কমার বদলে বেড়েই চলেছে। বহু কোম্পানিতে জোর করে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে কর্মীদের। সেইসঙ্গে কর্মীদের রীতিমতো আইনি সাহায্য দিয়ে পাশে দাঁড়াতে চাইছে বাম যুব সংগঠন।