Home First Lead ভোটের মওসুমে ব্যস্ত প্রেসপাড়া

ভোটের মওসুমে ব্যস্ত প্রেসপাড়া



তাপস প্রান্ত

চট্টগ্রাম: সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রচার-প্রচারণায়। আর এর অন্যতম অনুষঙ্গ হলো- ব্যানার, পোস্টার, লিফলেট, স্টিকার ও ফেস্টুন। নির্বাচনকে ঘিরে কিছু প্রেসে ব্যস্ততা বাড়লেও ক্ষতির মুখে আছে ৭০ভাগ প্রেস।

প্রত্যেক  বছর এই সময়ে চট্টগ্রামের প্রেস গুলোতে থাকত ব্যস্ততা। বছরের এই  সময়টা ডায়েরি, ক্যালেন্ডার ও বই ছাপার কাজে ব্যস্ত সময় পার  করত তারা। কিন্তু করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে  স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায়, আগের সেই ব্যস্ততা নেই প্রেসপাড়ায়। বিভিন্ন কর্পোরেট ব্যবসায়ীরা আগের মত সভা সেমিনার করছেনা। নভেম্বর থেকে নতুন বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে দিন-রাত কাজে ব্যস্ত থাকত তারা। কিন্তু এবারের চিত্রটা ভিন্ন।

জানাযায় ,নির্বাচনী মৌসুমে প্রকাশনা ব্যবসায়ীদের কাছে বয়ে আনত ঈদের আনন্দ। এ সময় তারা অন্য কাজের পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচার সামগ্রী তৈরিতে নির্ঘুম সময় কাটাত। ডিজাইনার থেকে শুরু ছাপাখানা সংশ্লিষ্ট কর্মী ও কাগজ বিক্রেতাসহ সবাই ব্যস্ত থাকত। কিন্তু এইবার অন্য কাজ না থাকায় সাধারণ সময়ে নির্বাচনের কাজ করছে তারা।

 লকডাউনে কাজ না থাকায়, লোকসানে পড়ে আন্দরকিল্লা, মোমিন রোড, চেরাগী পাহাড়, ঘাটফরহাদ বেগ, সিরাজউদ্দৌল্লহ রোডে গড়ে উঠা প্রকাশনা শিল্পকেন্দ্রিক অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। করোনার কারনে এই শিল্পখাতে হয়েছে কোটি টাকার লোকসান। এই শিল্পকে অবলম্বন করা  অনেকে হারিয়েছে তাদের কর্মসংস্থান। করোনাকালে  মুদ্রণশিল্প সমিতির হিসেবে ৫শ’  ছাপাখানার মধ্যে করোনা ধসে বন্ধ হয়ে গেছে বেশকিছু। বাইন্ডিং, প্রিন্টিং প্রভৃতি বিভিন্ন কাজে মুদ্রণশিল্পে ৮ হাজার শ্রমিক থাকলেও,বর্তমানে তা অর্ধেকে নেমেছে । গত ১০ মাসে অন্তত ৪শ’ কোটি টাকার লোকসান গুণেছেন এ শিল্পের ব্যবসায়ীরা।  এ পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রেসগুলোকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের সহযোগিতা চান প্রেস মালিকরা।

আন্দরকিল্লা মিন্টু প্রেসের ম্যানেজার নিক্সন বড়ুয়া বলেন, লকডাউনের জেরে আমাদের পথে বসার অবস্থা। অনেক টাকার অর্ডার বাতিল হয়ে গেছে।  বছরের এই সময়েটা আমাদের প্রেস ব্যবসায়ীদের জন্য সিজন। স্কুল কলেজ বন্ধ  থাকায়  ব্যবসা চলবে কী করে!’ সরকারের উচিত প্রেস শিল্পে  প্রণোদনা দিয়ে, এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখার।

বার আউলিয়া প্রেসের মালিক নাছির উদ্দিন বলেন, নির্বাচনী পোস্টারের কাজ বেড়েছে। প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হলে আমরা অর্ডার পাই বেশি। সব দলের অংশগ্রহণ হলে সব প্রার্থীরা অর্ডার করে, আমাদের ব্যবসা ভালো হয়।লকডাউনে পরে আমাদের অনেক কর্মী চাকরি হারিয়েছে। এখন যারা কাজ করে তাদের ঠিকঠাক বেতন দিতে পারছি না। আগামী দিনে কী ভাবে ব্যবসা চালবে নিজেরাও জানিনা।

চট্টগ্রাম প্রেস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হারুন বলেন, আমাদের প্রায় ৫শত প্রেসের মধ্যে অল্প কিছু প্রেস নির্বাচনী কাজ করছে ।কিন্তু অধিকাংশ প্রেস লোকসানে আছে। করোনার কারনে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় বই খাতা তৈরির সাথে জড়িত প্রেস গুলোতে কাজ নেই বললেও চলে। বিভিন্ন অফিসে কমার্শিয়াল অনুষ্ঠান গুলো বন্ধ এবং বিয়েতে ইভেন্ট বন্ধ থাকার কারণে ক্ষতির পরিমান বেড়েছে বেশি। মালিকদের চেয়ে শ্রমিকেরা আছেন বেশি সমস্যায়। আয় না থাকায় মালিকেরা শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে পারছেনা।