বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
সম্প্রতি ব্রিটেন ও আমেরিকা দাবি করেছে যে নিষিদ্ধ ক্লাস্টার বোমার প্রয়োগ করেছে রাশিয়া। অ-পরমাণু যুদ্ধে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ও প্রাণঘাতী মারণাস্ত্র ভ্যাকিউম বোমা ছোড়া হয়েছে ইউক্রেনের শহরগুলিতে।
যুদ্ধক্ষেত্রে এই বোমার ব্যবহার নিষিদ্ধ ১৯৪৯ সালের জেনিভা চুক্তি অনুযায়ী। আমেরিকায় ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রদূত ওসামা মাকারোভা দাবি করেছেন, ইউক্রেনে ভয়ঙ্কত হত্যালীলা চালাচ্ছে রাশিয়া। সম্ভবত তারা ভ্যাকিউম বোমার প্রয়োগ করেছে। একের পর এক শহর ছারখার হয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যার হিসেব মিলছে না। পরমাণু যুদ্ধের হুঙ্কার দিয়েছে রাশিয়া, তার আগেই ভ্যাকিউম বোমার মতো মারণাস্ত্রের প্রয়োগ করেছে তারা। যদিও মস্কো এ ব্যাপারে এখনও মুখ খোলেনি।
ভ্যাকিউম বোমাকে বলা হয় থার্মোবারিক অস্ত্র বা অ্যারোসল ওয়েপন। এর মধ্যে এমন জ্বালানী ভরা থাকে যা বাতাসের অক্সিজেনের সংস্পর্শে এলেই দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। এর ফলে যে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ হয় তার তীব্রতা মারাত্মক। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সবকিছু ছাড়খাড় করে দিতে পারে এই বোমার বিস্ফোরণ। একসঙ্গে অসংখ্য মানব শরীর ঝলসে দিতে পারে এই বোমা। ভ্যাকিউম বোমা ফাটলে যে গনগনে আগুনের আঁচ ছড়িয়ে পড়ে তা গলিয়ে বাষ্পীভূত করে ফেলতে পারে মানব শরীর। পুড়িয়ে দেয় ফুসফুস ও মস্তিষ্কের কোষ।
ভ্যাকিউম বোমায় ফুয়েল-এয়ার এক্সপ্লোসিভ বা এফএই থাকে বাতাসের সংস্পর্শে এলেই জ্বলে ওঠে। থার্মোবারিকে প্রায় ১০০ শতাংশ জ্বালানী ভরা থাকে। এতে তাকে ইথিলিন অক্সাইড এবং প্রোপিলিন অক্সাইড। এই দুই রাসায়নিক ভীষণই বিষাক্ত। কোনও সুড়ঙ্গে বা বাঙ্কারে এই বোমা ফেললে তা বাতাসের অক্সিজেনের সঙ্গে মিশে বিষাক্ত গ্যাসপুঞ্জ তৈরি করে। এর মধ্যে মিশে থাকা রাসায়নিক শরীরে ঢুকে ফুসফুস পুড়িয়ে দেয়। ক্ষতি হয় মস্তিষ্ক ও অন্যান্য অঙ্গের কোষগুলির। থার্মোবারিক রকেট লঞ্চারের সাহায্যে এই বোমা নিক্ষেপ করা হয়।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে ভ্যাকিউম বোমাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কোনও দেশ এই বোমার প্রয়োগ করলে তা যুদ্ধাপরাধ বলে বিবেচিত হবে। ২০০০ সালে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ দাবি করেছিল, ভিয়েতনামের যুদ্ধে আমেরিকা নাকি এই বোমার প্রয়োগ করেছিল। সেই যুদ্ধের ধ্বংসাত্মক পরিণতিও হয়েছিল শিউরে ওঠার মতোই। ব্রিটেনের দাবি, রাশিয়া একাধিকবার এই বোমার প্রয়োগ করেছে ইউক্রেনে। যে মারাত্মক ধ্বংসলীলা হয়ে ইউক্রেনীয় শহরগুলিতে তা এই বোমার আঘাতেই।