ঢাকা: দেশের সব মসজিদে নিয়মিত আযান, ইকামত, জামাত ও জুমার নামাজ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা)। তবে জুমা ও জামাতে মুসল্লিগণের অংশগ্রহণ সীমিত থাকবে।
এছাড়া ৮ধরনের মুসল্লিদের জুমা ও জামাতে অংশ না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ইফা। তারা হচ্ছে- যারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত,যাদের সর্দি, জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট আছে,যারা আক্রান্ত দেশ ও অঞ্চল থেকে এসেছেন,যারা করোনা আক্রান্ত মানুষের সংস্পর্শে গিয়েছেন, যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত, বয়ো:বৃদ্ধ, দুর্বল, মহিলা ও শিশু, যারা অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ও যারা মসজিদে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করেন তাদেরও মসজিদে না আসার অবকাশ রয়েছে ।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে বিরাজমান পরিস্থিতিতে জনগণের সুরক্ষা বিষয়ে পরামর্শ প্রদানে দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমদের সঙ্গে রোববার সকালে আগারগাঁওস্থ প্রধান কার্যালয়ে জরুরি বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইফা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আনিস মাহমুদ। প্রধান অতিথি ছিলেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: নূরুল ইসলাম। সভায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা বিষয়ে উপস্থিত বিশিষ্ট আলেমগণ স্ব স্ব মতামত উপস্থাপন করেন।
ইফা আরো বলেছে, যারা জুমা ও জামাতে যাবেন তারা সকলেই যাবতীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা অবলম্বন করবেন। ওযু করে নিজ নিজ ঘরে সুন্নাত ও নফল আদায় করবেন। শুধু জামাতের সময় মসজিদে যাবেন এবং ফরজ নামাজ শেষে দ্রুত ঘরে চলে আসবেন। সাবান দিয়ে বারবার হাত ধোয়া, মাস্ক পড়া, জীবাণুনাশক দ্বারা মসজিদ ও ঘরের মেঝে পরিস্কার রাখাসহ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সকল নির্দেশনা মেনে চলবেন। হঠাৎ হাঁচি-কাশি এসে গেলে টিস্যু বা বাহু দিয়ে মুখ ঢেকে রাখবেন।
মসজিদের খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও মসজিদ কমিটিকেও করণীয় সম্পর্কে ৮টি পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পরামর্শগুলো হচ্ছে-পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পূর্বে সম্পূর্ণ মসজিদকে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা এবং কার্পেট-কাপড় সরিয়ে ফেলা,জামাত সংক্ষিপ্ত করা, জুমার বয়ান, খুতবা ও দোয়া সংক্ষিপ্ত করা, বর্তমান সংকটকালে দরসে হাদীস, তাফসির ও তা’লীম স্থগিত রাখা, ওযুখানায় অবশ্যই সাবান ও পর্যাপ্ত টিস্যু রাখা, বর্তমান পরিস্থিতিতে জামাতের কাতারে ফাঁক ফাঁক হয়ে দাঁড়ানো, ইশরাক, তিলাওয়াত, যিকির ও অন্যান্য আমল ঘরে করা, ঢাকাসহ দেশের কোন মসজিদে যদি কোন বিদেশী মেহমান অবস্থানরত থাকেন তাদের বিষয়ে বিস্তারিত বিশে¬ষণ করে সত্ত্বর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
সভায় চট্টগ্রামের হাইয়াতুল উলয়া বাংলাদেশ’র চেয়ারম্যান ও আল জামিয়াতুল দারুল উলূম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক আহমদ শফি, আল জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া মহাপরিচালক আল্লfমা মুফতি আব্দুল হালীম বোখারী, গোপালগঞ্জের গওহরডাঙ্গা মাদরাসার নাযেমে তা‘লীমাত মুফতি নুরুল ইসলামসহ জামিয়া ইসলামিয়া ওবাইদিয়া মুহতামিম, মুফতি মুহাম্মদ ছালাহ উদ্দীন, জামেয়া কাসিমুল উলূম দরগাহে শাহজালাল (রাহ) মুহতামিম মাওলানা মুহিব্বুল হকসহ অনেক আলেমের পরামর্শ বিবেচনা করা হয়।
এছাড়া অনুষ্ঠিত এই সভায় দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরামের মধ্যে অংশ নেন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম আল্লামা ফরীদ উদ্দিন মাসউদ, জামেয়া ইসলামিয়া দারুল উলুমের মুহতামিম মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন, শায়খ যাকারিয়া (র.) ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মুফতি মীযানুর রহমান সাঈদ, জাতীয় মুফতি বোর্ডের সদস্য সচিব মুফতি মো: নূরুল আমীন প্রমুখ।-সংবাদ বিজ্ঞপ্তি