বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
মালয়েশিয়ার ১৫তম সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আজ শনিবার। প্রার্থী বেশ কয়েকজন হলেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম আছেন সবার চেয়ে এগিয়ে। তবে জনমত জরিপ বলছে, শেষ অবধি জয় পেতে পারেন আনোয়ার ইব্রাহিমই। মালয়েশিয়ান সংবাদমাধ্যম স্টার অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবার মোট ২ কোটি ১১ লাখ ৭৩ হাজার ৬৩৮ জন নিবন্ধিত ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এদের মধ্যে আনোয়ারের পাকাতান হারাপান জোট ৩৫ শতাংশ, মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের নেতৃত্বাধীন পেরিকটান জোটের ২০ শতাংশ, বারিসানের ১৭ শতাংশ ভোট রয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গবেষণা সংস্থা ইউগভ।
তবে অনেক বিশ্লেষক বলছেন, আনোয়ারের জোট হেরে যেতে পারে যদি অন্য ব্লকগুলো তার বিরুদ্ধে দল গঠন করে। কারণ, আগে থেকেই আনোয়ারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
নির্বাচনের একেবারে পূর্বাহ্নে প্রকাশ হওয়া তিনটি জরিপে তিন ধরনের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সব জরিপে অভিন্ন বিষয়টি হলো তিন জোটের কোনোটিই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। নির্বাচনের দিন-তারিখ ঘোষণার আগে মনে হয়েছিল উমনোর নেতৃত্বাধীন বারিসান ন্যাশনালের পক্ষে এবার একটি জোয়ার দেখা যাবে। জহুরসহ কয়েকটি রাজ্যের উপনির্বাচনে বারিসান বেশ ভালো ফল করার পর উজ্জীবিত উমনোর নেতৃত্ব আগাম নির্বাচনের জন্য চাপ সৃষ্টি করে।
এতে অনেকটা বর্ষার মধ্যেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনী প্রচারণার শুরুর দিকে জরিপগুলোতে আভাস পাওয়া গিয়েছিল মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আনোয়ার ইব্রাহিমের নেতৃত্বাধীন পাকাতান হারাপান ও ড. জাহিদ হামিদির নেতৃত্বাধীন বারিসান ন্যাশনালের মধ্যে। এ সময় মোট ভোটের এক-চতুর্থাংশ সমর্থন পাকাতান (২৬ শতাংশ) ও বারিসনের (২৪ শতাংশ) প্রতি রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। আর একই সময় পেরিকাতানের সমর্থনের অর্ধেকের (১৩ শতাংশ) কাছাকাছি বলে উল্লেখ করা হয় মারদেকা ফাউন্ডেশনের জরিপে। কিন্তু পরে জাতীয়তাবাদী মালয়দের দল বারসাতু ও ইসলামিস্ট পাসের সমন্বয়ে গঠিত পেরিকাতানের সমর্থন মালয় জোটে বাড়তে থাকে। মারদেকা সেন্টারের পরের সপ্তাহের জরিপে পাওয়া যায় নতুন ফল। এই জরিপে দেখা যায় পাকাতান (৩৬ শতাংশ) তিন জোটের মধ্যে কিছুটা এগিয়ে রয়েছে আর বারিসান (২১ শতাংশ) ও পেরিকাতান জোট (২২ শতাংশ) প্রায় কাছাকাছি জনসমর্থন নিয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে রয়েছে।
এমন আভাসও দেয়া হচ্ছে যে বারিসানের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত মালয় প্রধান রাজ্য পাহাংয়ে পেরিকাতান সরকার গঠনের মতো আসন পেতে পারে। সেখানে বারিসানের এক জনপ্রিয় নেতাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি যিনি এখন পেরিকাতানের হয়ে লড়াই করছেন। আর পাসের প্রভাবশালী নেতা ইব্রাহিম তুয়ান মানকে সেখানকার পেরিকাতানের সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
কেলানতান তেরাঙ্গানু ও কেদাহতে আগে থেকেই পেরিকাতানের সরকার ছিল। এই তিন রাজ্যে জোটটি এবারো ভালো করতে পারে। জহুর ও পাহাংয়ে পেরিকাতান ভালো করলে বারিসান আসন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তিন নম্বরে নেমে আসতে পারে। বারিসান বা উমনোর জনপ্রিয়তায় এই ভাটির টানের মূল কারণ হলো দলের মধ্যে একে অন্যকে সাইজ করার প্রবণতা। ইসমাইল সাবরি এক সময় নাজিব ও জাহিদকে সাইড লাইনে সরিয়ে দিতে তাদের বিরুদ্ধে মামলাগুলোকে দ্রুত সচল করার ব্যাপারে মহিউদ্দিনের সাথে হাত মিলিয়েছিলেন। এর প্রতিশোধ নিতে নাজিব-জাহিদ বলয় মহিউদ্দিনের প্রতি সমর্থন তুলে নিলে তার সরকারেরও পতন ঘটে। তবে পেরিকাতানের সমর্থনে ইসমাইল সাবরিই প্রধানমন্ত্রী হন।