দেশের প্রথম মেট্রোরেল চালু হবে ডিসেম্বরে। তবে আংশিকভাবে। প্রথম দফায় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলাচল করবে। ২০২৩ সালে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো প্রকল্প চালু হবে। পুরো মেট্রোরেল প্রকল্প চালু করতে ১০ সেট (প্রতি সেটে ৬টি বগি) ট্রেন প্রস্তুত করা হয়েছে। ট্রেন চলবে ফজরের নামাজের পর থেকে শুরু করে রাত ১২টা পর্যন্ত।
সোমবার (২২ আগস্ট) প্রবাসী কল্যাণ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন সিদ্দিক। মেট্রোরেল প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব তথ্য জানান।
এম এ এন সিদ্দিক বলেন, শুরুতে ১০ মিনিট পরপর মেট্রোরেলের ট্রেন চলবে। পরে নিয়মিত প্রতি সাড়ে তিন মিনিট পরপর চলাচল করবে। পর্যায়ক্রমে যাত্রী বেড়ে গেলে এক ট্রেনের সঙ্গে অন্য ট্রেনের বিরতি কমিয়ে আনা হবে। এ সময় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক চলাচলের ‘পারফরম্যান্স টেস্ট’ পর্ব শেষ পর্যায়ে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট শুরু হবে। এ পর্যায়ে মেট্রোরেলের বৈদ্যুতিক, সংকেত ব্যবস্থাসহ সব ব্যবস্থা সমন্বিতভাবে ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা, তা পরীক্ষা করা হবে। অক্টোবর থেকে সিমুলেটরের মাধ্যমে ট্রেন পরিচালনা করা হবে। শেষ ধাপে যাত্রীবিহীন ট্রেন চলাচল করবে। যাত্রী নিয়ে যে গতিতে এবং যেভাবে চলার কথা, ঠিক সেভাবেই ১৫ দিন যাত্রীবিহীন চলাচল করবে। ডিসেম্বরে যাত্রীসহ আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে এ প্রকল্প।
ডিসেম্বরে মেট্রোরেল চালুর কথা বললেও কোন তারিখে সেটি উদ্বোধন হবে, বলেননি ডিএমটিসিএল’র এমডি। তবে, আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে মেট্রোরেল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হতে পারে বলে সরকারি পর্যায়ে আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে।
মেট্রোরেলের ভাড়ার বিষয়ে এম এ এন সিদ্দিক বলেন, ভাড়া নির্ধারণে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একটি কমিটি কাজ করছে। শিগগিরই ভাড়া চূড়ান্ত হয়ে যাবে।
তিনি জানান, উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত পুরো পথের ওপরের কাজ শেষ হয়ে গেছে। কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া স্টেশন থেকে নামার সিঁড়ির পর জায়গা থাকছে না। সেজন্য ফুটপাত নির্মাণের জন্য নতুন করে জমি অধিগ্রহণ হচ্ছে। মেট্রো চালুর আগেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে মেট্রোরেল প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের দিকে। গত জুলাই পর্যন্ত উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৮১ দশমিক ৭০ শতাংশ। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ৯৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। প্রথম দিকে মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় ছিল প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। মেট্রোরেল সম্প্রসারণসহ আনুষঙ্গিক কাজে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়াবে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাপানের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা জাইকা। সর্বশেষ ব্যয় প্রস্তাব অনুযায়ী জাইকা দেবে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা।