রক্তচাপ বেড়ে গেলেই হাইপার টেনশনের কবলে পড়তে হয়। হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ (Hypertension) এই সময়ের অন্যতম লাইফস্টাইল ডিজিজ। অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপই হার্টের রোগ, ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী। রক্তে কোলেস্টেরল বাড়তে থাকলে এবং রক্তচাপের হেরফের হলে তার থেকে আরও নানানটা রোগ বাসা বাঁধে। হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ এমনই এক সমস্যা যা নিঃশব্দে শরীরের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে ক্রমশ বিকল করে দেয়। কীভাবে রক্তচাপকে বশে রাখা যায়, কীভাবে লাইফস্টাইল বদলে স্ট্রেস ফ্রি সুস্থ জীবন কাটানো যায় সেই নিয়ে আলোচনা করলেন আমরি হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট কার্ডিওলজিস্ট ডক্টর প্রকাশ হাজরা।
রক্তচাপ (Hypertension) যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে
রক্তচাপ ১৪০/৯০ ছাড়ালেই উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত বলা যায়। যে কোনও সুস্থ ব্যক্তির স্বাভাবিক রক্তচাপ হওয়া উচিত ১২০/৮০ । যদি কারও রক্তচাপ ১৪০/৯০ এর বেশি হয় তখন তার রক্তচাপ বেড়েছে বলা যায়। আমাদের দেশে হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ। আচমকা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ অর্থাৎ স্ট্রোকের জন্যেও দায়ী ব্লাড প্রেশার।
এসেনশিয়াল হাই ব্লাড প্রেশার (Hypertension) অর্থাৎ কোনও সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই যাঁদের ব্লাড প্রেশার চড়ে যায় তাঁদের অন্য কিছু সমস্যা থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি। দেখা গিয়েছে এদের ডায়াবেটিস থাকতে পারে। সঙ্গে রক্তে ইউরিক অ্যাসিড, কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাডের মাত্রা থাকে অনেক বেশি। এই হাই রিস্ক উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের নিয়মিত মনিটরিং দরকার। ওষুধ ও লাইফস্টাইল মডিফিকেশন করে প্রেশার কমিয়ে রাখা উচিত।
লাইফস্টাইল বদলেই ভাল থাকা যায়
ব্লাড প্রেশারকে বশে রাখতে রোজকার জীবনযাত্রায় কিছুটা পরিবর্তন আনতেই হবে। বাড়তি ওজন কমানো প্রথম কাজ। হাইপারটেনশনের (Hypertension) ঝুঁকি বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য মেটাবোলিক ডিজিজ যেমন ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড, হার্টের অসুখের ঝুঁকি বাড়ে।
- নিয়মিত এক্সারসাইজের পাশাপাশি সঠিক ডায়েট করে ওজন কমাতে হবে।
- কোলেস্টেরল বাড়ে এমন সব খাবার না খাওয়াই ভাল। রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল যাতে বেড়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- নুন খাওয়া কমানোই ভাল। জাঙ্ক ফুড, অতিরিক্ত তেলমশালাদার খাবারে রুচি বদলানো দরকার।
- ঝুঁকিপূর্ণ উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের নিয়মিত মনিটরিং দরকার। ওষুধ ও লাইফ স্টাইল মডিফিকেশন করে রক্তচাপ কমিয়ে রাখা উচিত। প্রত্যেক ছয় সপ্তাহ অন্তর এঁদের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
- তামাক জাতীয় জিনিস ছাড়তে হবে।
- এ ছাড়া প্রয়োজন মন ভাল রাখা এবং দৈনিক নিয়ম করে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম। কম ঘুম রক্তচাপ বাড়ানোর পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমিয়ে দেয়।
প্রয়োজনে ওষুধের মাত্রা বদলে ও নতুন ওষুধের সাহায্যে কমপ্লিকেটেড হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। প্রেশার কমে গিয়েছে ভেবে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে বিপদ ডেকে আনবেন না। কোনও কমপ্লিকেশন না থাকলেও বছরে দু’বার চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।