Home উদ্যোক্তা রাবেয়ার সফলতার গল্প

রাবেয়ার সফলতার গল্প

রাবেয়া। ছবি সংগৃহীত

কৃষকের সফলতার গল্প

নাম: রাবেয়া বেগম,স্বামী: আলাউদ্দিন মন্ডল। গ্রাম: গৌরিপুর। পোস্ট: গোয়ালন্দমোড়। ইউনিয়ন: শহীদওহাবপুর। উপজেলা: রাজবাড়ী সদর, জেলা: রাজবাড়ী।

সিআইজির নামঃ গৌড়িপুর মহিলা সিআইজি

রাবেয়া বেগম যার জন্ম কৃষক পরিবারে এবং ছোটবেলা থেকেই প্রকৃতি, কৃষি ও মাটির সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। তিনি লেখাপড়ার পাশাপাশি সংসারের কৃষি কাজে মাঝেমাঝে মা-বাবাকে সহযোগিতা করতেন।

প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখায় বেশীদূর আগাতে না পারলেও কৃষির প্রতি তার অদম্য টানে এবং কৃষিতে উদ্যোক্তার নেশায় কৃষিকেই জীবীকার প্রধান হাল ধরে তার স্বামীর সহযোগিতায় জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যান। তার মোট আবাদি জমির পরিমান ৩ একর যেখানে তিনি ধান, পেঁয়াজ, রসুন, ফল ও বিভিন্ন শাক সবজি উৎপাদন করেন।

প্রচলিত কৃষি থেকে বেড়িয়ে তিনি ২০১৯ খ্রি: থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাজবাড়ী সদর, রাজবাড়ী এর এনএটিপি-২ প্রকেল্পের আওতায় প্রযুক্তিগত সহযোগিতা,প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ গ্রহন পাশাপাশি তার আগ্রহ,কঠোর পরিশ্রম ও সুপ্ত প্রতিভার মাধ্যমে কৃষিতে অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়ে যাচ্ছেন। তিনি নতুন নতুন প্রযুক্তি গ্রহনে খুবই একজন অগ্রগামি কৃষক।

তিনি কমিউনিটি বীজ উৎপাদন প্রযুক্তির আওতায় ব্রিধান-৮২ এবং ফলন পার্থক্য প্রযুক্তির আওতায় বিনা ধান-১৯ জাতের ০১ একর জমিতে আউশ ধান আবাদ করে বীজ সংরক্ষণ করে এলাকার কৃষকদের মাঝে বিতরণের পাশপাশি বিভিন্ন বাজারে বিক্রয় করেন।

ফলন ভালো হওয়ায় এবং এলাকার নতুন ফসল ও জাতের ধানের চাহিদা থাকায় তিনি প্রাথমিকভাবে ২.০ টন বীজ বিক্রয় করে প্রায় ১.০ লক্ষ টাকা আয় করেন। তিনি নিরাপদ সবজি উৎপাদন করে পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে নিরাপদ সবজি বিক্রয় করে বছরে প্রায় ১.০ লক্ষ টাকা আয় করেন।

মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় তিনি নিজস্ব পালিত ৩ টি গরুর গবর সংরক্ষন করে হাউস আকারে ভার্মিকম্পোস্ট উৎপাদন করছেন যেখান থেকে তিনি প্রতি দুই মাস অন্তর অন্তর ৫০০ কেজি ভার্মিকম্পোস্ট সংগ্রহ করে থাকেন।

তিনি ১.০ একর জমিতে আধুনিক  জাতের বারি পেঁয়াজ-৪ এবং কিং পেঁয়াজ আবাদ করে প্রায় ২০০ মন পেঁয়াজ উৎপাদন করে থাকেন। আধুনিক কৃষির ছোয়ায় ২০১৯ খ্রি: এর পূর্বে তার মাসিক গড় আয় ছিলো মাত্র ১৫,০০০/- টাকা যা দিয়ে তার তিন ছেলে মেয়ের লেখাপড়া ও সংসার চালানো কষ্টকর ছিলো কিন্তু বর্তমানে তার মাসিক গড় আয় ৩০,০০০/- টাকা যা দিয়ে তার সন্তানদের ভালোভাবে পড়ালেখা খরচ পূরণ করার পাশাপাশি সংসারের ব্যয় নির্বাহো করতে পারেন।

তিনি গত ২ বছরে ১ বিঘা ফসলি জমি ক্রয় করেন এবং বসবাসের নিমিত্তে বাড়িতে ১ টি সুন্দর ঘর নির্মান করেন। এছাড়াও তিনি কৃষি কাজ করে তার ১ সন্তানকে বুয়েটে পড়াশুনা করাচ্ছেন। তিনি এনএটিপি-২ প্রকল্প থেকে প্রাপ্ত প্রযুক্তি তার সিআইজি সহ এলাকায় অন্যান্য কৃষকদের মাঝে কৃষির আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের পাশাপাশি কৃষিতে একজন বড় উদ্যোক্তা হতে চান যাতে গ্রামীন কৃষকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হয়।

সূত্র: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাজবাড়ী