বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
কলকাতা: ফ্যাশন, যে যাঁর মতো করে শব্দটার ব্যাখ্যা করে নেন। আবার স্টাইলের ক্ষেত্রে ব্যক্তি বিশেষে বদলে যায় সেটার ইউনিকনেস। কিন্তু আপনি কি জানেন, শহরের বুকে এমন এক গলি আছে যা বদলে দেয় পোশাকের চেহারা। ম্যাজিক করে পুরোনো জিন্সকে করে দেয় নতুন! চলুন হেঁটে দেখা যাক কলকাতার এই ‘লন্ড্রি অ্যালি’ দিয়ে!
কলকাতার মহম্মদ আলি পার্কের বিপরীতে নীলমাধব সেন লেনের কয়েকশ পরিবার বছরের পর বছর ধরে এই ম্যাজিক করে আসছেন। এখানে পুরোনো জিন্সকে নতুন রূপ দেওয়া হয়, আর তারপর সেগুলো চলে যায় প্যাকিং হয়ে ঝাঁ চকচকে শপিং মলে! কলেজস্ট্রিট কিংবা মেডিকেলে যাওয়ার জন্য এই গলি দিয়ে যদি একবার যান, তাহলে শূন্যে চেয়ে দেখবেন- দড়িতে ঝুলে রয়েছে বিভিন্ন রঙের জিন্স। যাঁরা এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন, তাঁরা সকালে গিরীশ পার্ক থেকে পুরোনো জিন্স কিনে আনেন, আর পরের দিন নতুন করে সেটা মার্কেটে ছাড়েন। সারাদিন ধরে তাঁরা ব্যস্ত থাকেন জিন্সগুলো ধুতে কিংবা সেলাই করতে।
মোহাম্মদ শেখ গাজি গত পাঁচ বছর ধরে যুক্ত রয়েছে এই ব্যবসার সঙ্গে। তিনি বলেন, “প্রতিদিন ভোর ৪টে তে উঠে তারপর ৫টার মধ্যে গিরীশ পার্কে পৌঁছাতে হয়। সেখান থেকে ২০-৪০ টাকা দিয়ে প্রতিটা জিন্স কিনি। তারপর সেগুলো পরিষ্কার করতে ১৫ টাকা খরচ হয়। এরপর আমরা এতে নতুন করে রঙ করি, প্রয়োজনে সেলাই ও পালিশ করি।”
এখানকার আর এক জন শ্রমিক বাবলু জানান যে, “এখানে যারা কাজ করি তারা বেশিরভাগই এসেছি বিহার থেকে। তাই লকডাউনের সময়ে খুবই সমস্যার মুখ পড়তে হয় আমাদের। আর এখন তো কাজ অনেক কম আগের থেকে!” এরই প্রসঙ্গ ধরে বাবলু জানান যে তাঁরা ধর্মতলা, হাতিবাগান চত্বরে জিন্স বিক্রি করেন। এছাড়াও কেরালা, ঝাড়খণ্ড ও বিহারেও তাঁদের এই জিন্স রফতানি করা হয়।
পাইকারি দরে যাঁরা কেনেন তাঁরা ৫০-৬০টাকা দেন প্রতি জোড়া জিন্সের দাম! তারপর বাজারে সেগুলোই বহুগুণ বেশি টাকাতে বিক্রি করেন। এর পাশাপাশি আরও ব্যবসায়ীরা বলেন যে ভিন্ন রাজ্যে মাল পাঠানো গেলে মুনাফা তুলনামূলকভাবে বেশি আসে। তবে ক্রেতাকে ঠিক জিনিস দেওয়ার জন্য প্রতিদিন বাজারে যাওয়ার যে প্রয়োজন রয়েছে, সে কথাও জানান জিন্সের ব্যবসায়ীরা। এই ব্যবসা থেকে তাঁদের আয় জানতে চাওয়া হলে তাঁরা বলেন, ১৫০০০ থেকে ২০০০০ মতো রোজগার হয় তাঁদের।