Home Second Lead রাস্তা থেকে বিলিয়ন ডলারের মালিক, কিন্তু কিভাবে

রাস্তা থেকে বিলিয়ন ডলারের মালিক, কিন্তু কিভাবে

  • ১৭ বছর বয়সে বাবা-মা বাড়ি থেকে বের করে দেয়
  • ছোট্ট ক্যাপের স্টক বুম থেকে ভাগ্যক্রমে তাইহির ধনী হওয়া

কথায় আছে ছেঁড়া কাঁথাতে শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা, কিন্তু এটা শুধু কথার কথা হয়ে থেকে যায় নি। বাস্তবের মাটিতেও সত্যি হয়েছে, রাস্তার থেকে রাজপ্রাসাদে যাওয়ার রূপকথা সত্যি হয়ে গেছে তাইহি কোবায়শির জীবনে। টোকিওর রাস্তা থেকে স্টার্টআপ করে আজ ১বিলিয়ন ডলারের মালিক সে।

জাপানের ছোট্ট ক্যাপের স্টক বুম থেকে ভাগ্যক্রমে তাইহির ধনী হওয়ার গল্পটা সকলের কাছে খুবই উল্লেখযোগ্য। কোবায়শির সংস্থা, স্টার্টআপ ও অন্যান্য সংস্থাগুলোকে নতুন ব্যবসা ও পণ্য তৈরি করার ডিজাইন বানিয়ে দেয়। চলতি বছরের জুলাইতে সকলের সামনে আসে এই সংস্থা। এরই মধ্যে তার শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় তিন গুণ।

কয়েক বছর আগেও এমন জীবনটার কথা ভাবতে পারতেন না কোবায়শি। কোবায়শি জানান, ব্যবসা শুরু করবেন বলে ভাল স্কুলে পড়ার সুযোগ ছেড়ে দেন তিনি। মাত্র ১৭ বছর বয়সে বাবা-মা বাড়ি থেকে বের করে দেয় তাঁকে। তার পরের দেড় বছর মাথা গোঁজার কোনও ঠাঁই ছিল না তাইহির। রাস্তাতে থাকতেন, দিনের বেলাতে গান করতেন আর শীতকালে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে পিচবোর্ডের বাক্স ব্যবহার করতেন। জীবনের ঘাত প্রতিঘাত তাঁকে রাস্তাতে নামিয়ে আনে। শেষপর্যন্ত তিনি একটা চাকরি পান সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। তিনি ২০১২ সালে ভিয়েতনামের সান অ্যাসিস্ট্রিকে প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে যুক্ত হন।

৩৭ বছরের তাইহি জানান যে,”শীতের প্রবল ঠান্ডার মধ্যেও আমি রাস্তাতে রাত কাটিয়েছি। নরকের থেকে কঠিন সেই সময়। তবে আজ সেসব অতিক্রম করে আসতে পেরেছি।” তিনি আরও বলেন যে, “আমার স্কুল ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আমার বাবা মা মেনে নিতে পারেন নি। তাঁরা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার জন্য প্ল্যান করে রেখেছিলেন আগের থেকে। আমার এই সিদ্ধান্ত তাঁরা মেনে নিতে পারেন নি। তাঁদের কাছে আজও আমি সাকসেসফুল নই। তবে আমি আমার জীবনটা আমার মতো করে উপভোগ করছি।”

কোবায়শির স্কুলের বন্ধু যুবা ফুকাগওয়া বর্তমানে সান-এ কাজ করছেন। তিনিও তাইহির লড়াইয়ের কথা স্মরণ করেছেন। তিনি বলেন, “আমি জীবন নিয়ে এর থেকে খুব বেশি ভাবি না। তবে আমার বাবা মাকে একটু চিন্তিত মনে হয়েছিল শুরুর দিকে।” ছ’ঘণ্টার অঙ্ক, লজিক, আইকিউ পরীক্ষা দেয় কোয়াবশি। কোয়াবশি পরীক্ষাতে পাশ করে সফটওয়্যার ইঞ্জিয়ার হন।সানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মাকোটো হিরোইয়ের সঙ্গে দেখা হয় তাইহের। দুজনে মিলে একটি সংস্থা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। যাঁরা প্রোগ্রামিংয়ে পারদর্শী তাঁদেরকে সঙ্গে নিয়ে একটি কার্যনির্বাহী মডেল তৈরি করেন কোবায়শি ও মাকোটো।বাজারে সানের এখন ক্লায়েন্ট ৭০টিরও বেশি। জুলাই মাসে স্টার্টআপ সংস্থাগুলোর জন্য টোকিও স্টক এক্সচেঞ্জের একটি তালিকা তৈরি হয়, সেখানে নথিভুক্ত করা হয় তাঁদের তৈরি সংস্থাকে। এর শেয়ারগুলো সেপ্টেম্বরে প্রায় ছয়গুণ বেড়েছে আর এর বাজারমূল্য ১.৪ বিলিয়ন ডলারেরও ওপরে। কোবায়শি নতুন করে শুরু করার পর আয় হয়েছে ৭১ মিলিয়ন ডলার।

এছাড়াও আজকাল বাজারে  প্রতিযোগিতা অনেক বেড়ে গেছে। সময়ের সঙ্গে তালমিলিয়ে চলতে হয়। আর এই নিয়েই কথা বলেছেন সিনিয়র এক্সিকিউতিভ। ইচিয়োশি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মিতসুগেজ আকিনো জানান যে বাজারে এখন প্রতিযোগিতা প্রচুর। ফলে লাভ ও ক্ষতি দুটোই হতে পারে।কোবায়শি বলেন যে সান প্রতিবছর কমপক্ষে ২০% – ৩০% উপার্জন বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা করছে। টোকিও র অফিসে বর্তমানে ১৩০ জন কর্মচারী কাজ করছেন। আর ভিয়েতনামের মূল অফিসে ১৩০০ বেশি কর্মচারী কাজ করছেন। তাইহি জীবনে ঝুঁকি নিয়েছেন। চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন আর সফল হয়েছেন। তবে বর্তমানে বাবা মায়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আগের থেকে একটি ভাল হয়েছে বলে জানান।

-বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক