বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: করোনা পরীক্ষার ভুয়া সার্টিফিকেট প্রদান ও রোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়াসহ জালিয়াতির অভিযোগে ঢাকার রিজেন্ট হাসপাতাল সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। মালিক মো. সাহেদ পলাতক রয়েছে। গ্রেপ্তারের জন্য তাকে খুঁজছে র্যাব।
কেবল করোনা পরীক্ষা নিয়ে জালিয়তি নয়, এমএলএম কোম্পানি খুলে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ৩২টি।
র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান সারোয়ার বিন কাশেম মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমকে জানান, রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান শাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে র্যাবের চারটি দল।
র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান আরও বলেন, তিনি দেশের বাইরে চলে যেতে পারেন। এ ধরনের তথ্য আছে। আর সে অনুযায়ী বিমানবন্দরসহ স্থলবন্দরগুলোতেও তার ব্যাপারে তথ্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি যেন কোনোভাবেই দেশের বাইরে যেতে না পারেন। তাকেসহ অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
করোনা পরীক্ষার ভুয়া সার্টিফিকেট প্রদান ও রোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগে রিজেন্ট গ্রুপের মূল কার্যালয় এবং রাজধানীর উত্তরা ও মিরপুরের দুটি হাসপাতাল সিলগালা করে দেওয়া হয়। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের-র্যাবের অভিযানে এ অনিয়মের সত্যতা পাওয়ায় মঙ্গলবার এই সিলগালা করা হয়।
এর আগে সোমবার উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়।
তিনি জানান, হাসপাতালটি এ পর্যন্ত ১০ হাজারেরও বেশি করোনা পরীক্ষার সার্টিফিকেট প্রদান করেছে। তারা আইইডিসিআর, আইটিএইচ ও নিপসম থেকে ৪ হাজার ২০০ রোগীর বিনা মূল্যে নমুনা পরীক্ষা করিয়ে এনেছে। পাশাপাশি নমুনা পরীক্ষা না করেই আরও তিন গুণ লোকের ভুয়া করোনা রিপোর্ট তৈরি করেছে।
সরোয়ার আলম আরও বলেন, প্রতি পরীক্ষার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৩ হাজার ৫০০ করে টাকা নিয়েছে। এর মানে হলো তারা এ পর্যন্ত প্রায় ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। যদিও হাসপাতালটির সঙ্গে সরকারের চুক্তি ছিল ভর্তি রোগীদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার। সরকার এই ব্যয় বহন করবে।

জানা গেছে, হাসপাতালটির মালিক মোহাম্মদ সাহেদ বিএনপির সময় বিএনপি, আওয়ামী লীগের সময় আওয়ামী লীগ হয়ে যান। ২ বছর জেলও খেটেছেন। ২০১১ সালে ধানমন্ডির ১৫ নম্বর রোডে এমএলএম কো. বিডিএস ক্লিক ওয়ানের ব্যবসা করে সাধারণ মানুষের ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৩২টি মামলা রয়েছে।
অন্যদিকে নিজেকে কর্নেল (অব.) পরিচয় দিয়ে মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক বিমানবন্দর শাখা থেকে ৩ কোটি টাকা লোন নেওয়া নিয়েও তার বিরুদ্ধে আদালতে দুটি মামলা চলছে। বিভিন্ন টিভির টকশোতে মোহাম্মদ সাহেদকে দেখা যেত। তার প্রতিষ্ঠান রিজেন্ট কে সি এস লি. এর নামে ইউসিবি ব্যাংক উত্তরা শাখাসহ বিভিন্ন ব্যংকে শত শত কোটি টাকা রয়েছে বলে জানা গেছে।