মোঃ আব্দুল্লাহ হক, চুয়াডাঙ্গা থেকে: চুয়াডাঙ্গায় রেলওয়ের জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। জরিমানা করা হয় ২৩ হাজার টাকা।
বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
বস্তি উচ্ছেদের পর শ্রমিক, হকার, কাজের বুয়া, রিকশাচালকসহ কর্মজীবী নারী-পুরুষেরা মাথা গোঁজার ঠাঁয় নিয়ে পড়েছে বিপাকে। এই তীব্র শীতে বয়োবৃদ্ধ ও শিশুসন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচেই বসে আছে প্রায় ২৫০টি পরিবার। এখন থেকে অনিশ্চয়তায় কাটবে তাদের রাত।
উচ্ছেদ হওয়া ইদ্রিস আলী বলেন, মাত্র দুদিন আগে নোটিস দিয়েছিল। ঘর সরিয়ে নিয়েছি। খোলা আকাশের নিচে আমার বয়োবৃদ্ধা স্ত্রী ময়না খাতুনকে নিয়ে বসে আছি। সামনের দিন কীভাবে কাটাব জানি না। এলাকার মেম্বাররাও কোনো খোঁজ নেয়নি। সরকার এতো উন্নয়ন করছে দেখছি, কিন্তু আমাদের তো কিছু হলো না। আমাদের একটা ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানাচ্ছি। দয়া করে আমাদের একটা ব্যবস্থা করে দেন। আমরা এই শীতের মধ্যে খুব কষ্টে আছি।
শাহিন নামে এক যুবক বলেন, ১৫ বছর ধরে এখানে মা-বাবা ও স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছি। গত ৫-৬ দিন আগে একটি দোকান দিয়েছিলাম। দুদিন আগে নোটিস দিয়েই বাড়িসহ দোকান ভেঙে দিয়েছে। এখন আমার থাকার জায়গাটাও নেই। জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন, আমাদের যেন একটা ব্যবস্থা করে দেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল ও ডিভিশনাল (ভূসম্পত্তি) অফিসার মো. নুরুজ্জামান বলেন, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে রেলওয়ের উন্নয়নের জন্য সরকার যে প্রকল্প হাতে নিয়েছে তার মধ্যে চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন একটি। কাজ করার সুবিধার্থে অন্যান্য রেলওয়ে জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে চুয়াডাঙ্গায় ২ মাস যাবত চেষ্টা করছি অবৈধ স্থাপনা সরানোর জন্য। নোটিস এবং মাইকিং করেও কোনো কাজ হয়নি। তাই আজ মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে রেলওয়ের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। প্রায় ৩০০ বাড়িঘর নিজেরাই সরিয়ে নিয়েছে। কারো ক্ষয়ক্ষতি করে উচ্ছেদ অভিযান করা হয়নি।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মো. আমিনুল ইসলাম খান বলেন, রেলওয়ে তার জমিতে থাকা অবৈধ স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে। বস্তিবাসীদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হবে। যারা প্রকৃত অসহায় তারা আবেদন করলে আমরা বাসস্থানের বিষয়টি দেখা হবে।
