বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
- চলতি সপ্তাহে আরও সাড়ে ৩ হাজার যাবেন। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য আধুনিক বাসস্থান ছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক ও খেলার মাঠ গড়ে তোলা হয়েছে।
কক্সবাজার: ১৬৪২ জন রোহিঙ্গার প্রথম দলটি ভাসানচর পৌঁছে গেছে। দুপুর ২টার দিকে জাহাজ নোঙর ফেলেছে সেখানে।
রোহিঙ্গারা গেছেন ৬টি জাহাজে এবং আরও দু’টি জাহাজে গেছে তাদের মালামাল।
চলতি সপ্তাহে আরও সাড়ে ৩ হাজার যাবেন। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য আধুনিক বাসস্থান ছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক ও খেলার মাঠ গড়ে তোলা হয়েছে।
নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমকেজেড শামীম জানান, শুক্রবার সকাল সোয়া ১০টার পর চট্টগ্রাম বোট ক্লাব জেটি থেকে তিনটি, আরআরবি জেটি থেকে দুটি ও কোস্টগার্ড জেটি থেকে সেনাবাহিনীর একটি জাহাজ করে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের বহনকারী ৩৯টি বাস কক্সবাজারের উখিয়া কলেজের মাঠ থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়।
১ হাজার ৬৩৫ রোহিঙ্গা নারী, শিশু ও পুরুষ রাতে চট্টগ্রামে পৌঁছান। পতেঙ্গা বিএএফ শাহীন কলেজ মাঠ ও বোট ক্লাব এবং এর আশপাশের এলাকায় অস্থায়ী ট্রানজিট শিবিরে তারা ছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পর্যায়ক্রমে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গা নেয়া হবে সেখানে। রোহিঙ্গাদের এই দলটি থাকবে ভাসানচরের অত্যাধুনিক আবাসন প্রকল্পে। এরই মধ্যে ভাসানচরে মজুদ করা হয়েছে তিন মাসের খাদ্যপণ্য।
প্রথম দিকে রোহিঙ্গাদের রান্না করা খাবার সরবরাহ করবে বেসরকারি সংস্থাগুলো। এজন্য ২২টি এনজিওর প্রতিনিধিরা কাজ শুরু করেছে ভাসানচরে।
সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারপারসন জেসমিন প্রেমা জানান, শুধু আগ্রহী রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেয়ার কাজ করছে সরকার এবং ২২টি উন্নয়ন সংস্থা। এসব রোহিঙ্গাকে জাহাজে ওঠার আগে বিভিন্ন ডাটা এন্ট্রি সাপেক্ষে বরাদ্দকৃত আশ্রয়ণের টোকেন ও চাবি হস্তান্তর করা হয়।
সরকারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সামছুদ্দৌজা বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য সেখানে মহিষ, ভেড়া, হাঁস, কবুতর পালন করা হচ্ছে। আবাদ করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি। পরীক্ষামূলকভাবে ধান চাষও করা হচ্ছে। প্রকল্পটিতে যেন ১ লাখ ১ হাজার ৩৬০ শরণার্থী বসবাস করতে পারেন সে লক্ষ্যে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হয়েছে। ১২০টি গুচ্ছগ্রামে ঘরের সংখ্যা ১ হাজার ৪৪০টি।
তিনি বলেন, সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এর আগে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা তিন শতাধিক রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে ভাসানচরে নিয়ে রাখা হয়েছিল। এরপর গত ৫ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি দলকে দেখার জন্য ভাসান চরে পাঠানো হয়। তারা ফেরার পর তাদের কথা শুনে রোহিঙ্গাদের একাংশ ভাসান চরে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।