Home First Lead লকডাউনের খবরে কাঁচাবাজার সুপারসপে ভিড়

লকডাউনের খবরে কাঁচাবাজার সুপারসপে ভিড়

*১০ থেকে ১৫ দিনের বাজার করছে ক্রেতারা

নাজমুল হোসেন

চট্টগ্রাম: করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে ৭ দিনের লকডাউন ঘোষণার সংবাদে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানগুলোতে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে।

নগরীর বিভিন্ন বাজারে আতঙ্কের কেনাকাটা বা প্যানিক বায়িং শুরু হয়ে গেছে। মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বাজারে ভিড় করছে। কেউ কেউ একসঙ্গে অধিক পরিমানে পণ্য কিনে ঘরে ফিরছেন।

এছাড়া, নগরীর কাাঁচাবাজার সুপার মাকের্টগুলোতেও লোকজনের প্রচন্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। লকডাউনের খবরে ঈদের কেনাকাটাও সেরেছেন কেউ কেউ।

শনিবার (৩ এপ্রিল) বিকেল থেকেই নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে। বেশিরভাগ মানুষ সংসারের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য—চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ ও আলু কিনছিলেন।

দোকানিরা জানান, বিকেল ৩টার পর থেকে দোকানে ক্রেতা সমাগম বাড়তে শুরু করে। অনেকেই ১০ থেকে ১৫ দিনের বাজার একসাথে সংগ্রহ করে বাড়ি ফিরছেন। বাজারে সাধারণত দুপুর ১টার পরে ভিড় দেখা যায় না। তবে আজ লকডাউন আসছে এমন খবরে দুপুরের পর থেকে ক্রেতাদের উপস্থিতি বেড়েছে। সময় যত যাচ্ছে ক্রেতারা তত ভিড় জমাচ্ছেন।

বন্দরটিলা কাঁচাবাজারের ম্যানেজার মো.মামুন বিজনেসটুডে২৪কে বলেন, দুপুরের পর থেকে বাজারে সাধারণত ক্রেতাদের উপস্থিতি কম থাকে। আজ অন্যান্য দিনের চেয়ে একটু বেশি ক্রেতা দেখা যাচ্ছে। সামনে রোজা ও লকডাউন এ দুই কারণে হয়তো ক্রেতারা বেশি পণ্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই একসঙ্গে ১০-১৫ দিনের বাজার করছেন। ক্রেতাদের এমন ভিড় হবে জানলে আরো পণ্য মজুদ করতাম। যদিও সন্ধ্যা ৬ টায় দোকান বন্ধের কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

কাজির দেউড়ি এলাকার বাসিন্দা রিমন বিজনেসটুডে২৪কে বলেন, কয়েকদিন ধরে যে হারে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে তাতে ঘর থেকে বের হওয়া বিপদজনক। তাই এখন একসঙ্গে কয়েক দিনের বাজার করতে হচ্ছে।

হালিশহরের এক গৃহিনী বলেন, সামনে রমজান মাস তাই আগে থেকে বাজার করার পরিকল্পনা ছিল। ভেবেছিলাম আরও কয়েকদিন পর করব। আজ হঠাৎ লকডাউনের ঘোষণার পর দ্রুত বাজারে আসতে হলো। লকডাউনের কারণে যদি দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায় তাহলে এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারব না।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত একজন জানান, গেল ঈদেও পরিবারের জন্য ঈদের কেনাকাটা করা হয়নি। এবারও একই পরিস্থিতি হতে পারে। এ কারণে লকডাউন শুরুর খবরে টেরিবাজার থেকে ঈদের কেনাকাটা সেরে ফেলি।

এদিকে ফার্মেসি ও বিভিন্ন দোকানে বেড়েছে হ্যান্ডওয়াশ ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের চাহিদা।

চেরাগী পাহাড়ের ‘নিউরানের’ এক কর্মি বলেন, লাইফবয়, স্যাভলন ও ডেটল হ্যান্ডওয়াশের রিফিল প্যাক শেষ হয়ে গেছে। ক্রেতা আসছেন কিন্তু দোকানে মজুত না থাকায় দিতে পারছি না।

লকডাউন ঘোষণার পর ফুটপাত থেকে মার্কেট সব জায়গায়ই মাস্ক কিনতে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ। এ সুযোগে বেশি দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। সকালে পাঁচটি সার্জিক্যাল মাস্ক ১০টাকায় বিক্রি হলেও এখন একটি মাস্কের দাম চাওয়া হচ্ছে ১০টাকা।

হঠাৎ কেন অতিরিক্ত দাম রাখা হচ্ছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে কোনো সদুত্তর দিতে পারলেন না মাস্ক বিক্রেতা হাবিব। তিনি বলেন, সাতদিন লকডাউন থাকবে। আমরা কিভাবে খাব? কিভাবে চলব? অতিরিক্ত টাকা না নিলে তো না খেয়ে মরতে হবে।

উল্লেখ্য, শনিবার (৩এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে করোনা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হওয়ায় আগামী সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার। আজ সন্ধ্যার মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবে। তবে শিল্প-কলকারখানা শর্তসাপেক্ষ চালু থাকতে পারে। বন্ধ থাকবে দোকানপাট-শপিংমল।