বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারজয়ী লেখক ও চিকিৎসক অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী হেরে গেলেন মাল্টিপল মায়েলোমা নামক রক্তের ক্যান্সারের কাছে। প্রায় ৮ বছর ধরে তিনি এই রোগের সাথে লড়াই করছিলেন।
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারজয়ী লেখক ও চিকিৎসক অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করে তার ভাই অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী জানান, শুভাগত চৌধুরী ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন এবং চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। আজ সকালে তিনি বাসায় হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়লে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শুভাগত চৌধুরীর দুই মেয়ে দেশের বাইরে থাকে। তারা এলে শেষকৃত্য নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। আপাতত হাসপাতালের হিমঘরে মরদেহ রাখা হবে।
১৯৪৭ সালে সিলেটে জন্ম শুভাগত চৌধুরীর। তিনি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে চিকিৎসাশাস্ত্রে অধ্যয়ন করেন এবং দীর্ঘ ৩৫ বছর সরকারি চাকরি জীবনে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে অধ্যাপনা করেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। চিকিৎসা বিষয়ে গবেষণার জন্য তিনি লন্ডনের সেন্ট থমাস হাসপাতালে যান।
এছাড়াও ইংল্যান্ড, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া ও পশ্চিম আফ্রিকা সহ বিভিন্ন দেশে প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তার গবেষণার বিষয় ছিল প্রাণ রসায়ন, পুষ্টি ও চিকিৎসা শিক্ষা পদ্ধতি। তিনি নিউইয়র্ক সায়েন্স একাডেমির নির্বাচিত সদস্য ছিলেন।
ডা. শুভাগত চৌধুরী একজন জনপ্রিয় লেখকও ছিলেন। তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞানের উপর ৩৮ টিরও বেশি গ্রন্থ রচনা করেছেন। চিকিৎসাক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি ২০০৯ সালে শেরে বাংলা জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন।
খ্যাতিমান এই চিকিৎসক ২০০৪ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর বারডেমসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অসংখ্য গ্রন্থ, গবেষণা ও প্রবন্ধ রচনা করেছেন শুভাগত চৌধুরী। তার গবেষণার মূল বিষয় ছিল প্রাণরসায়ন, পুষ্টি ও চিকিৎসা-শিক্ষা পদ্ধতি।
দেশি-বিদেশি পত্র-পত্রিকা এবং চিকিৎসাবিজ্ঞান জার্নালে তিনি অনেক প্রবন্ধ লিখেছেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানের লেখক হিসেবে তিনি সুপরিচিত।
বিজ্ঞান, কল্পবিজ্ঞান ও পরিবেশবিজ্ঞান শাখায় বিশেষ অবদানের জন্য শুভাগত চৌধুরী ২০২১ সালের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেন।