বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: বাজারে কোম্পানির লেনদেনের শুরুতে শেয়ারের সরবরাহ কম থাকার কারণে অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধি পায়। এই দর বৃদ্ধির পেছনে কোম্পানির ফান্ডামেন্টাল কোন কিছু বিচার-বিশ্লেষণ করা হয় না।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান এ কথা উল্লেখ করে বলেন যে এই সংকট নিরসনে শেয়ারের সরবরাহ বাড়াতে হবে।
শনিবার (১০ অক্টোবর) ‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ’ উপলক্ষে বিএমবিএর আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ।বিশেষ অতিথি ছিলেন দি ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন আকন্দ ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন । মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএমবিএর সদস্য মীর মাহফুজ উর রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিএমবিএর সাধারণ সম্পাদক মো. রিয়াদ মতিন।
ছায়েদুর রহমান বলেন, বিগত কমিশন লেনদেনের প্রথম ও দ্বিতীয় দিন ৫০ শতাংশ করে সার্কিট ব্রেকার আরোপ করে। কিন্তু তারপরেও ওই সীমার সর্বোচ্চতে দর বৃদ্ধি পায়।
শেয়ারবাজারের উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় প্রযুক্তির (টেকনোলজি) গুরুত্ব অপরিসীম। এই টেকনোলজির মাধ্যমে এখন একজন বিনিয়োগকারী ঘরে বসেই বিনিয়োগের জন্য সব তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।
বিনিয়োগ শিক্ষায় টেকনোলজির গুরুত্ব অনেক জানিয়ে বিএমবিএ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ টেকনোলজিতে অনেক এগিয়েছে। তবে এখনও অনেক ঘাটতি রয়েছে। এই ঘাটতির কারনেই করোনা মহামারীর মধ্যে দেশের শেয়ারবাজার ৬৬ দিন বন্ধ রাখতে হয়েছিল।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, টেকনোলজিকে আরও উন্নত করতে পারলে শেয়ারবাজারকে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বাইরে নিয়ে যাওয়া যাবে। বিদেশিরা আমাদের দেশের ক্যাপিটাল মার্কেটে বিনিয়োগে গভীরভাবে আগ্রহী। কারণ তারা তাদের দেশে ১ শতাংশও রিটার্ন পায় না। আমরা তাদের সুযোগ করে দিতে পারলে বিনিয়োগ আসবে। এ নিয়ে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করেছি। শেয়ারবাজারের গভীরতা বাড়াতে সবপক্ষ থেকেই কাজ করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, এই মার্কেটটা অত্যান্ত বেগবান এবং গভীর হবে যাতে করে দেশের কল্যাণ হবে। একসময় ৫০ লাখ টাকার লেনদেন হলেই অনেক মনে করা হতো। তবে এখন সেই লেনদেনের পরিমাণ চলে এসেছে হাজার কোটিতে। এটা সম্ভব হয়েছে টেকনোলজির উন্নতির কারণে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৫ শতাংশের ওয়েবসাইট নাই বা কাজ করে না। এছাড়া ওয়েবসাইট থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৭ শতাংশের সর্বশেষ আর্থিক হিসাব নেই। অথচ এগুলো থাকা বাধ্যতামূলক। কারণ একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগের জন্য ওই কোম্পানির ওয়েবসাইটসহ অন্যান্য তথ্য থাকা উচিত। ৩২টি কোম্পানির ৬২ জন পরিচালক মারা গেছেন। কিন্তু ওই কোম্পানিগুলোর ওয়েবসাইটে তার আপডেট নেই। এসবের কারণে বিনিয়োগকারীরাও সঠিক তথ্য পাচ্ছে না।
মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে আইপিও আসে উল্লেখ করে বিএসইসির কমিশনার বলেন, বিনিয়োগকারীরা তাদের উপর আস্থা রেখে বিনিয়োগ করে থাকে। সেক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠানের বিডিং প্রাইস যদি ১২ টাকা থেকে ৭৬৫ টাকা পর্যন্ত হয়, তাহলে এসব বিষয়গুলো বিএমবিএর দৃষ্টিগোচর হওয়া উচিত। বাজারে বিনিয়োগ করতে আসা বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি যেনো কম হয়, সেজন্য আমাদের কাজ করতে হবে বলে জানান শেখ সামসুদ্দিন।