Home চা শিল্প শ্রমিকদের বিরোধে কাজ বন্ধ পাত্রখোলা চা বাগানে

শ্রমিকদের বিরোধে কাজ বন্ধ পাত্রখোলা চা বাগানে

১ লাখ ২০ হাজার কেজি পাতা নষ্ট

বিজনেসটুডে২৪ সংবাদদাতা

মৌলভীবাজার: কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা বাগানের শ্রমিকদের দুটি গ্রুপের মধ্যে সৃষ্টির বিরোধে ২ দিন ধরে দেশীয় অস্ত্র- নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করায় বাগানে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বিক্ষোভ প্রদর্শন ও উত্তেজনার কারণে চা বাগানে ২ দিন ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে গত দুই দিনে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার কেজি গ্রিন লিফ টি বিনষ্ট হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৬ লক্ষাধিক টাকা।ইতোমধ্যে বাগানের উত্তেজিত শ্রমিকদের শান্ত করতে পুলিশ অবস্থান করছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে শ্রমিকদের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ নিরসনের জন্য আগামী ১৯ জুন উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তাই চা শ্রমিকরা ১৬ জুন থেকে কাজ যোগদান করতে সম্মত হয়েছেন।এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুপুরে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক ও কমলগঞ্জ থানা পুলিশ উত্তেজনা সৃষ্টিকারী উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে শ্রমিকদের কাজে যোগদান করতে বলেন। সেই সাথে আগামী ১৯ জুন সকালে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে বৈঠকে বসার কথা বললে শ্রমিকরা সম্মত হয়। ফলে বর্তমানে বাগানে উত্তেজনা কিছুটা কমেছে ।

জানা যায়, ন্যাশনাল টি কোম্পানির অধীনস্থ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের পাত্রখোলা চা বাগানের কর্তৃত্ব বিস্তার করা নিয়ে বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি দেবাশীষ চক্রবর্তী শিপন ও সাধারণ সম্পাদক কমল কুড়াইয়ার মধ্যে বিরোধ চলছিল। বিরোধের জের ধরে গত ১৪ জুন সকাল ৮টায় চা শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে বাগানের কারখানার সামনে দেশীয় অস্ত্র তীর-ধনুক দা লাঠি নিয়ে অবস্থান করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এসময় চা বাগানের কারখানার গেইটের ভেতরে থাকা পাগলা ঘণ্টা পিটিয়ে শ্রমিকদের একত্রিত করা হয়। উত্তেজিত শ্রমিকরা চা বাগানের কোন কর্মকর্তা- কর্মচারীকে কারখানার ভেতরে প্রবেশ করতে বাঁধা দেয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সহকারি পুলিশ সুপার (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সার্কেল) শহিদুল হক ভূইয়া এর নেতৃত্বে পুলিশ ও র‌্যাপিড একশন ব্যাটেলিয়ন অবস্থান করে। একইভাবে ১৫ জুন সকালেও শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে।

ন্যাশনাল টি কোম্পানি (এনটিসি)-র এজিএম ও পাত্রখোলা চা বাগান ব্যবস্থাপক শামছুল ইসলাম সেলিম যোগাযোগ করলে বলেন, আসলে বাগান ব্যবস্থাপনার কোন সমস্যা নয়। চা বাগান পঞ্চায়েতের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দুটি গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছে। বিরোধের কারণেই বাগানে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

ন্যাশনাল টি কোম্পানির পাত্রখোলা চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক কামরুজ্জামান এর সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, এখন চা পাতা উৎপাদনের ভরা মৌসুম চলছে। গত ২দিন বাগানে শ্রমিকরা কাজ না করায় ফ্যাক্টরিতে প্রায় ৬০ হাজার গ্রিন লিফ ও আজকের প্রায় ৬০ হাজার কেজি গ্রিন লিফসহ ১ লাখ ২০ হাজার কেজি গ্রিন লিফ বিনষ্ট হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৬ লক্ষাধিক টাকা।এদিকে পরপর ২দিন বাগানের শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রাখায় চা পাতা উৎপাদন বন্ধসহ উত্তোলিত কাঁচা পাতা বিনষ্ট হয়েছে।এমন অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে ভয়াবহ অবস্থার মুখোমুখি হতে হবে।