বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
ফিদেল কাস্ত্রোর দেশ ইতিহাস তৈরি করল। কিউবার জনগণ সমলিঙ্গ বিয়ে ও সারোগেসির পক্ষে রায় দিল। ফলে এবার থেকে এই কমিউনিস্ট দেশের সমকামীদের আর কোনও বাধার মুখে পড়তে হবে না।
কিউবা সরকার সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন ‘ফ্যামিলি কোড’ বা পরিবার পরিকল্পনা আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়। সেখানে সমলিঙ্গ বিয়ের, পাশাপাশি সমকামী দম্পতিদের সন্তান দত্তক নেওয়ার অধিকার, সারোগেসিকে বৈধ করার মতো সব বৈপ্লবিক পরিবর্তনের কথা বলা হয়। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রাউল কাস্ত্রোর সময়ে পার্টি কংগ্রেসে এই নিয়ে প্রস্তাব নেওয়া হয়। সেটাই এবার বাস্তবায়িত হল। যদিও এই বিপুল পরিবর্তন দেশের মানুষের উপর চাপিয়ে দিতে চায়নি মিগুয়েল দিয়াজ ক্যানেলের কমিউনিস্ট সরকার। তারা সংবিধান মেনে গণভোটের সিদ্ধান্ত নেয়। সোমবার সেই গণভোটের ফল প্রকাশিত হয়েছে।
১০০ পাতার ‘ফ্যামিলি কোড’ বিলের উপর আয়োজিত গণভোটে প্রায় ৫০ লক্ষ ৮৫ হাজার কিউবান ভোট দেন। তারমধ্যে বিলের স্বপক্ষে, মানে সমলিঙ্গ বিয়ে, সারোগেসির অধিকার ইত্যাদির পক্ষ ভোট দেন ৩৯ লক্ষ মানুষ (৬৬.৯%)। আর বিপক্ষে ভোট দেন ১৯ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষ (৩৩%)।
সোমবার সে দেশের সরকারি টেলিভিশনে ভোটের এই ফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনের প্রধান অ্যালিনা বালসেইরো গুতিরেজ। কিউবানরা এই ঐতিহাসিক পরিবর্তনের পক্ষ রায় দেওয়ার পরই রাষ্ট্রপতি মিগুয়েল দিয়াজ ক্যানেল ট্যুইট করেন, “ন্যায় হয়ে গিয়েছে।”
এই নতুন আইন পাশ হয়ে যাওয়ার ফলে কিউবার সমকামীরা যেমন বিয়ে করতে পারবেন, তেমনই বিনা ঝঞ্ঝাটে সন্তান দত্তক নিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে পরিবারে সমকামী দম্পতিদের সমান অংশিদার থাকবে, আইনে তেমনটাই বলা আছে। তবে সারোগেসি আইনসিদ্ধ হলেও তার জন্য বেশকিছু নিয়ম মানতে হবে।
এই গণভোট নিয়ে পশ্চিমের রাজনৈতিক মহল আবার অন্য একটি দিক খুঁজে পেয়েছে। তাদের দাবি, ফিদেল কাস্ত্রোর নেতৃত্বে কিউবার বিপ্লব সফল হওয়ার পর থেকে যত গণভোট হয়েছে, সেখানে রাষ্ট্রের প্রস্তাবিত দাবি প্রায় সকল জনগণ সমর্থন করেছেন। কিন্তু ফ্যামিলি কোডের ক্ষেত্রে বিরোধীতার হার ৩৩%, পশ্চিমি দুনিয়ার মতে এটা কিউবানদের মধ্যে কমিউনিস্ট সরকার বিরোধী মনোভাব বৃদ্ধি পাওয়ার বহিঃপ্রকাশ।