বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
তালিবানের ভয়ে কয়েক বছর আগেই আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়েছিলেন দেশের প্রাক্তন মন্ত্রী সৈয়দ আহমেদ শাহ সাদাত। এখন তিনি থাকেন জার্মানির লাইপজিগ শহরে। তাঁর পেশা, বাড়ি বাড়ি পিৎজা ডেলিভারি দেওয়া। বাইসাইকেলে চড়ে পুরো শহর ঘুরে বেড়াতে হয় তাঁকে। লাইপজিগের এক সংবাদপত্রে এই খবর জানানো হয়েছে।
২০১৮ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের মন্ত্রী ছিলেন সাদাত। জার্মানিতে পালানোর কয়েক মাস পরেই তাঁর সঞ্চিত অর্থ ফুরিয়ে যায়। বাধ্য হয়ে তিনি পিৎজা ডেলিভারি বয়ের কাজ নেন। সাদাত জানান, “আমি এখন খুব সাধারণ জীবন যাপন করি। জার্মানিতে আমি নিরাপদ। এখানে পরিবারের সঙ্গেই আমি থাকি। আমি অর্থ জমিয়ে জার্মান ভাষার ওপরে একটা কোর্স করতে চাই।”
সাদাত জানান, জার্মানিতে এসে তিনি অনেকগুলি চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন, টেলিকম শিল্পে কাজ করবেন। কিন্তু কোথাও সুযোগ না পেয়ে পিৎজা ডেলিভারির কাজ নেন।
তালিবান কাবুলের দখল নেওয়ার পর থেকেই হাজার হাজার আফগান দেশ ছাড়তে চাইছেন। ভারত, ব্রিটেন, আমেরিকা নিজেদের দেশের নাগরিকদের উদ্ধার করে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, যতদিন না আফগানিস্তান থেকে উদ্ধারকাজ শেষ হবে, ততদিন সেখানে মার্কিন সেনা মোতায়েন থাকবে। পরে তালিবানের সঙ্গে চুক্তি মাফিক ৩১ অগস্ট অবধি সময় ধার্য হয়। তালিবান মুখপাত্র জানায়, ওই দিনের মধ্যেই সেনা প্রত্যাহার করতে হবে আমেরিকাকে। বাইডেন এই শর্তে প্রথমে রাজি হলেও এখন উদ্ধারকাজের সময়সীমা আরও বাড়ানোর কথা বলছেন। তাতেই হুঁশিয়ারি দিয়ে তালিবান জানিয়ে দেয়, নির্ধারিত দিনের থেকে আর একদিনও বেশি সময় দেওয়া হবে না।
এই মুহূর্তে কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সুরক্ষায় রয়েছে ৬ হাজার মার্কিন সেনা। বাইডেন বলেছেন, আফগানিস্তান থেকে উদ্ধারকাজ এখনও অবধি ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিনতম কাজ। সামান্য ভুলেই তালিবানের গুলির মুখে পড়তে হবে বাসিন্দাদের। এতে মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর ঝুঁকিও রয়েছে।
কয়েকদিন আগে আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়েছিল একটি মহিলা রোবটিকস টিম। মঙ্গলবার সেই টিমের সদস্যরা পৌঁছন মেক্সিকোতে। তাঁদের ‘উষ্ণতম অভ্যর্থনা’ জানায় মেক্সিকো সরকার।
এর আগেই মেক্সিকো জানিয়েছিল, তালিবান কবলিত আফগানিস্তানের মেয়েদের সাহায্য করা হবে। মেক্সিকোর বিদেশ মন্ত্রী মার্সেলো এবরার্দ গত ১৮ অগাস্ট বলেন, “আফগান নাগরিকদের অনেকে শরণার্থী হিসাবে আমাদের দেশে আশ্রয় নিতে চান। আমরা তাঁদের আবেদনপত্রগুলি খতিয়ে দেখব। মহিলাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।”
একটি সূত্রে জানা যায়, একদল স্বেচ্ছাসেবকের সাহায্যে আফগানিস্তান থেকে মেক্সিকোয় পৌঁছেছেন মহিলা রোবটিকস টিমের সদস্যরা। ওই স্বেচ্ছাসেবকরা আফগানিস্তানেরই নাগরিক। পাছে তালিবান তাঁদের ওপরে প্রতিশোধ নেয়, তাই তাঁরা নিজেদের নাম জানাননি।