Home First Lead সিন্ডিকেট করে রড ও সিমেন্টের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে: এফবিসিসিআই

সিন্ডিকেট করে রড ও সিমেন্টের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে: এফবিসিসিআই

রড আমদানির অনুমতি চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে চিঠি

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা: ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআিই বলেছে যে গত তিন মাস ধরে দেশের ইস্পাত ও সিমেন্ট উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো সিন্ডিকেট করে অযৌক্তিকভাবে রড ও সিমেন্টের মূল্য বাড়িয়ে চলেছে। এই লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি শুধু নির্মাণ ও আবাসন শিল্পের ওপরই বিরূপ প্রভাব ফেলছে তা নয়, বরং সামগ্রিকভাবে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা-কেও ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে। এফবিসিসিআই  এ প্রেক্ষাপটে চেয়েছে রড আমদানির অনুমতি।

এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া এক চিঠিতে সম্প্রতি  এই অনুমতি চেয়ে তিনি দেশের নির্মাণসংশ্লিষ্ট পণ্যের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি রোধ ও  নির্মাণ খাতে চলমান অস্থিরতা নিরসনে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, গত কয়েক মাসে নির্মাণ ও অবকাঠামো খাতের মূল কাঁচামালের দাম ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার গৃহীত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথাসময়ে সম্পন্ন করা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, গত পাঁচ থেকে ছয় মাস ধরে, বিশেষ করে গত এক মাসে অবকাঠামো খাতের মূল কাঁচামাল যেমন রড, সিমেন্ট, পাথর, বিটুমিন, কপার, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদির মূল্য ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে যা নির্মাণশিল্পের ওপর অকল্পনীয় বিরূপ প্রভাব ফেলছে। বর্তমানে বাংলাদেশে নির্মাণব্যয় এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ঠিকাদারদের পক্ষে তাদের চলমান এবং আসন্ন প্রকল্পগুলোর কাজ যথাযথ মান বজায় রেখে চুক্তিতে নির্ধারিত মূল্যে সম্পন্ন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

এই অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে দেশের নির্মাণ খাত অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবে এবং বিদেশি ঠিকাদারদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে বেশিরভাগ স্থানীয় নির্মাণ প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দেউলিয়া হয়ে গেলে তাদের অর্থায়ন করা দেশের প্রায় সব ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানও খেলাপি ঋণের কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে উল্লেখ করেছে এফবিসিসিআই।

চিঠিতে আরও বলা হয়, গত তিন মাস ধরে দেশের ইস্পাত ও সিমেন্ট উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো সিন্ডিকেট করে অযৌক্তিকভাবে রড ও সিমেন্টের মূল্য বাড়িয়ে চলেছে। এই লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি শুধু নির্মাণ ও আবাসন শিল্পের ওপরই বিরূপ প্রভাব ফেলছে তা নয়, বরং সামগ্রিকভাবে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা-কেও ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে।

চিঠিতে বলেছে, এফবিসিসিআই মনে করে যে, কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে তাদের উৎপাদিত পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করার আগে সেই পণ্যগুলোর সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যবসাগুলোর লাভ-ক্ষতির কথাও বিবেচনায় রাখা উচিত। উল্লেখ্য, আমাদের দেশীয় রড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিমধ্যেই সরকারের কাছ থেকে নানারকম সুবিধা পাচ্ছে। তা সত্ত্বেও দিনের পর দিন রডের দাম বাড়িয়েই চলেছে।

এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যমান এবং আসন্ন সরকারি প্রকল্পগুলো যথাসময়ে সম্পন্ন করার নিমিত্তে অনতিবিলম্বে বাইরের যেকোনো দেশ থেকে রড (এমএস রড) আমদানি করার অনুমতি দেওয়া প্রয়োজন বলে জানায় এফবিসিসিআই। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কতটুকু পরিমাণ রড আমদানি করতে হবে তা সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক এবং ক্রয় কমিটির প্রধান প্রকল্পের নকশা এবং বিল অব কোয়ান্টিটি যাচাইপূর্বক প্রত্যয়ন করে দেবেন। অতঃপর এফবিসিসিআই এটি অনুমোদন করবে এবং এরপরই কেবল ব্যাংকগুলো সরকারি নির্মাণ প্রকল্পগুলোর জন্য এলসি খোলার সুবিধা দেবে। এছাড়াও আমদানি সংক্রান্ত ট্যারিফ এবং ডিউটি কাঠামো এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে যাতে প্রকল্প সাইটে পৌঁছানো অব্দি রডের টনপ্রতি মূল্য ৬০ হাজার টাকার নিচে থাকে।