বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনে কাজ হল কতটা, এতদিন সেই অপেক্ষাই চলছিল। এবার সেই রিপোর্টই সামনে আনল ‘দ্য ল্যানসেট’ মেডিক্যাল জার্নাল।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির তৈরি ভ্যাকসিন মানুষের শরীরে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত ও নিরাপদ। ভ্যাকসিনের একটা ডোজেই শরীরে টি-কোষ সক্রিয় হয়েছে। ভ্যাকসিন যাদের দেওয়া হয়েছে তাদের ৯০ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালের রিপোর্ট সামনে আনল ব্রিটেনের ঐতিহ্যশালী এই বিশ্ববিদ্যালয়।
কীভাবে তৈরি হয়েছে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন? কীভাবে সক্রিয় করছে টি-কোষকে?
জেন্নার ইউনিভার্সিটির গবেষকদের সাহায্যে ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড) টেকনোলজি ব্যবহার করে ভেক্টর ভ্যাকসিন ChAdOx1 nCoV-19 ক্যানডিডেট ডিজাইন করেছে অক্সফোর্ডের ভাইরোলজিস্ট সারা গিলবার্টের টিম। ভ্যাকসিন গবেষণায় রয়েছেন অক্সফোর্ডের ভাইরোলজিস্ট সারা গিলবার্ট, অধ্যাপক অ্যান্ড্রু পোলার্ড, টেরেসা লাম্বে, ডক্টর স্যান্ডি ডগলাস ও অধ্যাপক অ্যাড্রিয়ান হিল। পরে অক্সফোর্ডের সঙ্গে এই ভ্যাকসিন গবেষণায় যুক্ত হয় ব্রিটিশ-সুইডিশ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি অ্যাস্ট্রজেনেকা। সারা গিলবার্টের টিম জানিয়েছে, অ্যাডেনোভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে তৈরি এই ভেক্টর ভ্যাকসিন মানবদেহের বি-কোষ (B-Cell) ও টি-কোষকে (T-Cell) উদ্দীপিত করে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি করবে। যেহেতু নিষ্ক্রিয় অ্যাডেনোভাইরাসকে ভেক্টর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে তাই এই ভ্যাকসিনের কোনও ‘অ্যাডভার্স এফেক্ট’দেখা যাবে না মানুষের শরীরে।
গবেষক অ্যান্ড্রু পোলার্ড জানিয়েছেন, এই টি-কোষ হল শরীরের রোগ প্রতিরোধের মূল বর্ম। বেশিরভাগ ভ্যাকসিনই অ্যান্টিবডি তৈরির প্রক্রিয়াকেও যেমন সক্রিয় করে তেমনই টি-কোষকে সক্রিয় করে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। ভ্যাকসিনে কাজ হলে ইঞ্জেকশন দেওয়ার ১৪ দিনের মাথায় টি-কোষ সক্রিয় হয়ে ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তুলতে শুরু করে। বি-কোষ সক্রিয় হয়ে অ্যান্টিবডি তৈরি করে ২৮ দিনের মাথায়। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনও তাই করেছে। ৯০ শতাংশ মানুষের শরীরে এক ডোজেই অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে। বাকি ১০ শতাংশকে দুটি ডোজ দেওয়া হয়েছিল। তাদের শরীরেও পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে।
সামান্য কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন গবেষক পোলার্ড। তবে মারাত্মক কিছু নয়। ভ্যাকসিন দেওয়ার একদম পর পরই ৭০% স্বেচ্ছাসেবকের হালকা জ্বর ও মাথাব্যথা হয়। তবে সেটা কিছুদিনের মধ্যেই সেরে যায়।