বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ববাজারে সোনার এই দাম বাড়ার প্রেক্ষিতে এরই মধ্যে দেশের বাজারেও সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানোর ঘোষণা করেছে। এর ফলে বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ায় বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ বিক্রি করে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে সোনার দিকে ঝুঁকছেন। আন্তর্জাতিক বাজারে Comex গোল্ড ফিউচার প্রতি আউন্স ২,৯৩২.৬৯ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে,যা ৪৫.০৯ ডলার বা ১.৫৬% বৃদ্ধি। স্পট মার্কেটেও সোনার দাম ২,৯০০ মার্কিন ডলারের সীমা অতিক্রম করেছে।
এদিকে, দেশের বাজারে সব থেকে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার থেকে কার্যকর এই দাম। দেশের ইতিহাসে সোনার এত দাম আগে কখনো হয়নি।
সোমবার বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মঙ্গলবার থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ভালো মনের সোনার রেকর্ড দাম হওয়ার পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে অন্যান্য সোনার দামও। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৯০২ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৪৩ হাজার ১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৬৩৩ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ২২ হাজার ৫৭৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৩৮৮ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৯১৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের বাজারে এই প্রথম সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম এক লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেলো।
সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৫৭৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সোনার দাম হ্রাস-বৃদ্ধির পিছনে বহু কারণ থাকে। আন্তর্জাতিক বাজার, সুদের হার, দেশের সোনার বাজার, সরকারি মজুত, আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ডলারের প্রেক্ষিতে টাকার মূল্যের মতো বিষয়ে উপর সোনার দাম নির্ভরশীল।
![](https://www.businesstoday24.com/wp-content/uploads/2025/02/6077d280bd42f-300x225.jpg)
মার্কেটে বিভিন্ন ধরনের অর্থাৎ বিভিন্ন ক্যারেটের সোনা পাওয়া যায়। ২৪,২২,১৮ ক্যারেটের সোনা বিক্রি হয়। বিভিন্ন ক্যারেটের সোনার দামের মধ্যে পার্থক্য প্রচুর। ক্যারেট এখানে সোনার বিশুদ্ধতা পরিমাপের একক। ২৪ ক্যারেট সোনা হলো সোনার সবথেকে বিশুদ্ধতম (৯৯.৯৯%) রূপ। এটিকে পাকা সোনা বলা হয় আর এই সোনার বাজার দর সবথেকে বেশি। ২২ ক্যারেট (৯১.৬৭%) সোনাটি হলো গহনার সোনা, বাজারে বেশীরভাগ সোনা ২২ ক্যারেটে বিক্রি হয়। এই সোনার রেট ২৪ ক্যারেট সোনার চেয়ে কম ।বাজারে প্রচলিত ১৮ ক্যারেট (৭৫%) সোনার দাম আরও কম।
গহনা তৈরি হয় ২২ ক্যারাট সোনা দিয়েই। কিন্তু কেন? কারণ সোনা অত্যন্ত নরম ধাতু। ২৪ ক্যারাট সোনা দিয়ে তাই গয়নার সূক্ষ্ম কাজ করা অসম্ভব। তাই সোনাকে একটু কঠিন করতে সামান্য পরিমাণে অন্য ধাতু মেশানো হয়।