বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
বেশ কয়েকদিন হল দিয়ার দাঁতে হলুদ ছোপ পড়েছে। ঘষে মেজে কিছুতেই সেই দাগ যাচ্ছে না। এদিকে সেলফি ক্যুইন দিয়া পড়েছে মহা সমস্যায়। দাঁত বার করে কোনও ছবিই আর তুলতে পারছে না। কারণ এমনভাবে সামনের দাঁতে ছোপ পড়েছে, সেই নজর কারোর চোখই এড়িয়ে যাচ্ছে না। সেদিন যেমন পাশের বাড়ির এক কাকিমা দিয়ার দাঁতের দিকে নজর পড়তেই বললেন, ‘তোর দাঁত তো আগে এরকম ছিল না, ভালো করে দুবেলা ব্রাশ কর’। দাঁতের জন্য যে এরকম অপমানিত হতে হবে দিয়া তা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি। এখনও কারোর সামনে হাসতেও লজ্জা পায় সে। শুধু দিয়াই নন, এরকম সমস্যা আরও অনেকেরই রয়েছে। অনেকেরই মুখে দুর্গন্ধ হয়। আর কথা বললে সেই গন্ধ বাকিদের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দাঁতের সমস্যা কিন্তু কমিয়ে দেয় আত্মবিশ্বাসও। আর দাঁত ভাল রাখতে বিশেষজ্ঞরা প্রথমেই বলছেন ভালো করে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। দুবেলা খাওয়ার পর ব্রাশ করতে পারলে আরও ভালো। এতে খাবারের কোনও টুকরো দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকে না। আর যার ফলে মুখে কোনও রকম গন্ধও হয় না।
ডার্ক চকোলেট, বিট, গাজর বেশি খেলে দাঁতে ছোপ পড়তে পারে। রোজকার ডায়েটে ভিনিগার সহ প্রচুর সাইট্রাস অর্থাৎ টকজাতীয় খাবার থাকলে দাঁতের এনামেল ক্ষয়ে গিয়ে দাঁতে ছোপ ধরে যায়। অনেক সময় বেশি ওষুধ খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে দাঁতে কালো ছোপ পড়তে পারে। চোট লেগে দাঁতের রঙ বদলে কালচে বা নীলচে হয়ে গেলে দ্রুত চিকিৎসা করানো দরকার। ব্যথা থাকে না বলে কেউই প্রথমে খেয়াল করেন না। কিন্তু পরবর্তী কালে দাঁতের রঙ পাল্টে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোগান্তিও কম হয় না।
অনেকের দাত খোঁচানোর অভ্যেস থাকে। কিন্তু এই অভ্যাস থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কারণ এখান থেকে মাড়িতে জটিল কোনও ইনফেকশন হতে পারে। আসতে পারে আরও নানাবিধ সমস্যা।
যেমন খাবার সোডা দিয়ে সপ্তাহে তিনদিন দাঁত ঘষুন। দেখবেন এখদম ঝকঝক করছে।
লেবু খাওয়ার পর সেই খোসা ফেলে না দিয়ে ভালো করে দাঁতে ঘষে নিন। এতেও অনেক ময়লা কেটে যাবে। দাত থাকবে একদম চকচকে।
এছাড়াও মুখে জল নিয়ে বারবার কুলকুচি করতে হবে। তাতে যদি কোনও খাবারের কণা আটকেও থাকে তা সহজে দূর হয়ে যাবে। আর সেই কুলকুচি যদি ইষদুষ্ণ গরম জলে একটু নুন ফেলে করতে পারেন তাহলে আরও ভালো।
নিয়মিত সিগারেট, বিড়ি বা পানমশলা জাতীয় কিছু খাওয়ার অভ্যেস থাকলে এমনিই মুখে গন্ধ হয়। মাড়ির সমস্যা, দাঁত হলুদ হয়ে যাওয়া এসব হয়। এখান থেকে মুখে ইনফেকশন, এমনকী ক্যানসারও হতে পারে। তাই সুস্থ থাকতে এগুলি এড়িয়ে চলতেই হবে। আর সিগারেট খেলে বারবার মুখ ধোওয়া, মাউথ ফ্রেশনার এসব ব্যবহার করতে হবে।
স্কেলিং করলে দাঁতের হলুদ ভাব চলে যায় ঠিকই, কিন্তু একের বেশিবার স্কেলিং করা ঠিক নয়। এতে দাঁতের অ্যানামেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
কলার খোসার সাদা দিকটি নিয়মিত দাঁতে ঘোষলে দাঁতের হলদেটে ভাব দ্রুত কেটে যায়। তবে কলার খোসা দিয়ে দাঁত ঘষার পর অবশ্যই হলকা গরম জল দিয়ে ভাল করে কুলকুচি করে নিতে হবে।
তুলসি পাতা দাঁতের স্বাস্থ্যের পক্ষে বেশ উপকারী। বেশি করে তুলসি পাতা নিয়ে সেগুলিকে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। পাতাগুলো একেবারে শুকিয়ে গেলে সেগুলিকে গুঁড়ো করে যে কোনও টুথপেস্ট মিশিয়ে নিয়মিত ব্রাশ করলে দাঁতের হলুদ ভাব একেবারে চলে যায়। সেই সঙ্গে দাঁতে বিভিন্ন রোগের সম্ভাবনাও কমে।
দিনে একবার সর্ষের তেল আর নুন মিশয়ে দাঁত মাজুন। এতে মুখের গন্ধ দূর হবে। দাঁতও থাকবে ঝকঝকে। সেই সঙ্গে অন্য রকম ব্যাকটেকিয়ার প্রকোপ থেকেও মিলবে রেহাই।