“নবনির্মিত হলটি ৭২০ আসন বিশিষ্ট হওয়ার কথা থাকলেও আসন সংখ্যা থাকবে ৬৯৬টি। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের হলে সিট বরাদ্দের সময় সিনিয়রিটিকে প্রাধান্য দেওয়া হবে এবং একই ব্যাচের ক্ষেত্রে সিজিপিএ বিবেচনা করা হবে।”
মোঃ রুবাইয়াদ ইসলাম, হাবিপ্রবি (দিনাজপুর) থেকে: হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) মেয়েদের জন্য নির্মাণাধীন ছয় তলা বিশিষ্ট হলের কাজ প্রায় শেষের দিকে। বহুল প্রত্যাশিত এই হলটিতে মার্চ মাস নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা উঠতে পারবে বলে জানিয়েছেন নবনির্মিত হলের হল সুপার প্রফেসর ড. মোছা. আফরোজা খাতুন।
হলটিতে মোট ৬৯৬টি আসন রয়েছে এবং অন্যান্য হলের তুলনায় এটি অধিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে হল কর্তৃপক্ষ থেকে। নতুন এই আবাসিক হলে কোন গণরুম থাকবে না এবং ভবনের প্রতিটি কক্ষ হবে ৪ আসনবিশিষ্ট। এছাড়াও হলটিতে প্রধান ভবন ছাড়াও তিন তলা বিশিষ্ট আলাদা একটি ভবন তৈরি করা হয়েছে। ভবনটির প্রথম এবং দ্বিতীয় তলা ব্যবহৃত হবে ডাইনিংয়ের জন্য। পাশাপাশি পড়াশোনা করার জন্য দ্বিতীয় তলায় থাকবে রিডিং রুম। এছাড়াও তৃতীয় তলায় থাকছে জিমনেশিয়াম এবং কমনরুমের ব্যবস্থা।
হল সুপার প্রফেসর ড. মোছা. আফরোজা খাতুন বলেন, “ডিসেম্বরে হল স্থানান্তরের কথা থাকলেও আমরা এখন পর্যন্ত হল বুঝে পাইনি। হলের নির্মাণ কার্যক্রমের উপর নির্ভর করছে কবে নাগাদ আমরা হলে শিক্ষার্থী উঠাতে পারবো। তবে মার্চ মাসের মধ্যেই আমরা হল উন্মুক্ত করতে পারবো বলে আশা করছি।”
তিনি আরো বলেন, “নবনির্মিত হলটি ৭২০ আসন বিশিষ্ট হওয়ার কথা থাকলেও আসন সংখ্যা থাকবে ৬৯৬টি। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের হলে সিট বরাদ্দের সময় সিনিয়রিটিকে প্রাধান্য দেওয়া হবে এবং একই ব্যাচের ক্ষেত্রে সিজিপিএ বিবেচনা করা হবে।” এ সময় ওয়াইফাই ব্যবস্থার বিষয়টি পরে বিবেচনা করা হবে বলে জানান তিনি।
হলটি নির্মাণের দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ার মোঃ তারিকুল ইসলাম বলেন, “প্রধান ভবনের কাজ শেষ হয়েছে, কিন্তু কমন রুম এবং ডাইনিং রুমের কাজ এখনো সম্পূর্ন হয়নি। এই অসম্পূর্ণ কাজগুলো মার্চের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, “ভবন নির্মাণের শুরুতে পানির সমস্যার কারণে কাজ শুরু করতে অনেক সময় লেগেছিলো। তাছাড়া করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কর্মচারীরা কাজ করতে অনিহা প্রকাশ করে; যার ফলে আমাদের কাজে বিঘ্ন ঘটে।”
বিজ্ঞান অনুষদের এম.এস এর শিক্ষার্থী সাবরিন সুলতানা বলেন, “মেসে অবস্থানের ক্ষেত্রে আমাদের নানা রূপ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বছর ভিত্তিক চুক্তি সহ উন্নয়ন ফি প্রদান কোনো ভাবেই যৌক্তিক না। তাছাড়া পানি বিল, বিদ্যুৎ বিল সহ মেসের নানা ধরনের বিল পরিশোধ করা সকল শিক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর পক্ষে এতো সব খরচ বহন করে মেসে অবস্থান করা অনেক কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। অনেক শিক্ষার্থী এসব খরচ বহন করতে না পারার কারণে তাদের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার মতো অবস্থায় পড়তে হয়। এছাড়াও কয়েক হাজার শিক্ষার্থী শহরের দিকে মেসে অবস্থান করে। তাই নতুন হল দ্রুত চালু হলে হাবিপ্রবির পরিবহনের উপর যেমন চাপ কমবে ঠিক তেমনি অল্প খরচে নিজেদের ব্যয়ভার বহন করতে সক্ষম হবে শিক্ষার্থীরা।”
নতুন হল নিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, হাবিপ্রবিতে আবাসন সংকটের কারণে আমাদের অতিরিক্ত খরচ বহন করে বিভিন্ন মেসে থাকতে হচ্ছে। এই হল চালু হলে অনেক শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধা পাবে। এজন্য তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সাধুবাদ জানায় এবং আবাসন সংকট নিরসনের ধারা অব্যাহত থাকবে এই প্রত্যাশাই ব্যক্ত করে।
উল্লেখ্য, নবনির্মিত হলের কোন নাম এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক চূড়ান্ত করা হয়নি বলে জানা গেছে।