Home চট্টগ্রাম ভূয়া আমমোক্তারনামা দিয়ে জমি আত্মসাতের অভিযোগ

ভূয়া আমমোক্তারনামা দিয়ে জমি আত্মসাতের অভিযোগ

চট্টগ্রাম: দি চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির বিরুদ্ধে ভূয়া আমমোক্তারনামা দিয়ে জমি আত্মসাতের অভিযোগ এনেছে জমির মালিক মৃত মায়া রাণী নাথের পরিবারের পক্ষে কাজল মহাজনের স্ত্রী পাপিয়া দেবি।

তার অভিযোগ, গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি তারিখে মাহবুবুল হক নামের এক ব্যক্তি আরেকজনকে মায়া রাণী দেবী নাথ সাজিয়ে ৫ দাগের মধ্যে ১৮৭৯৬ দাগের ১৭ শতক বা ০.১৭ একর নাল জমি, অপ্রত্যাহারযোগ পাওয়ার অব এর্টনি নিয়ে একই বছরে পরের মাসে মার্চের ১৯ তারিখে দি চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেডের পক্ষে সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহানের নিকট সাফ কবলা দলিল মূলে বিক্রি হয়ে গেছে।

মোহাম্মদ শাহজাহান বলছেন, অভিযোগটি সত্য নয়। আমাদের কোম্পানীর আইনজীবীরা সবকিছু তদারকি করেছেন। তারপর সাব কবলায় রেজিস্ট্রি হয়েছে। যদি এ ধরণের কিছু হতো রেজিস্ট্রি হতো না। আর অভিযোগের সত্য মিথ্যা যাচাইয়ের জন্য পুলিশতো রয়েছে।

জানা গেছে, মায়া রাণী নাথের কোনো ভাই না থাকায় পৈতৃকভাবে পিতা মনমোহন নাথ কর্তৃক তার দুই মেয়ে মায়া রাণী নাথ ও ছায়া রাণী নাথ ভাগ হয়ে ০.৩৬০১ একর জমির মালিক হন। যাহার বিএস খতিয়ান নং-৫৩২২, মৌজা-দক্ষিণ পাহাড়তলী, থানা-হাটহাজারী, দাগ নং-১৯৩০৮, ১৯৮৪৯, ১৯৮৫৪, ১৯৮৭৪, ১৮৭৯৬। তবে থলের বিড়াল বের হয় খাজনা দেওয়ার সময়। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ভুমি অফিসে (চিকনদন্ডী) বরাবরের মতো খাজনা দিতে গেলে জানানো হয়, ১৮৭৯৬ দাগের খাজনা আপনি দিতে পারবেন না। জায়গাটি আপনার মা ৬৪ লাখ ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন।

শনিবার (১২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এস রহমান হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে মায়া রাণী নাথের ছেলে কাজল মহাজনের স্ত্রী পাপিয়া দেবি সাংবাদিকদের জানান, আমরা কোন দেশে বসবাস করছি। এই পাঁচ দাগের জায়গা আমরা দীর্ঘদিন ভোগ দখলে আছি এবং বিগত দিনে জমির খাজনাও পরিশোধ করে আসছি। কিন্তু চলতি বছরের সেপ্টম্বর মাসে চিকনদন্ডী ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা এই তথ্যটি জানিয়েছে। তবে আশ্চার্য বিষয় হলো, মৃত ব্যক্তি কিভাবে সাব কবলাতে স্বাক্ষর করলেন।

পাপিয়া দেবি বলেন, জমিটির চারদিক বাউন্ডারি দেওয়া। এখানে চাষবাস হয়। ভূমি কর্মকর্তাদের এমন তথ্যে আমরা ২০১৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারিতে রেজিস্ট্রিকৃত ভুয়া জার ও ফেরবূ আমমোক্তারনামা (দলিল নং- ৫০৬) সম্পোদনের জন্য তাদের বিরুদ্ধে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সি আর-মামলা নং-৩৩৪) আদালতে মামলা দায়ের করি। যা এখনো চলমান রয়েছে। আদালত উক্ত মামলাটি পুলিশ ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেয়। কিন্তু তদন্ত চলাকালীন সময়ে বিবাদিগণ উক্ত জমিতে ফসল নষ্ট করে মাটি -বালু ভরাট করার চেষ্টা করলে আমি হাহাজারী থানায় অভিযোগ দায়ের করি। তখন পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা সুস্তম আলী ও হাটহাজারী থানার এস আই সাইদুল ইসলাম এসে মাটি ভরাট বন্ধ করে দেয়। পিবিআই কর্তৃক তদন্তে আমমোক্তারনাম (৫০৬) ও সাফ কবলা দলিলটি জব্দ করে। পরে চলতি বছর ডিসেম্বরের ৭ তারিখে তয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে (চট্টগ্রাম মামলা নং-৪৩৭/২০২০) উক্ত দলিল বাতিলের মামলা আদালতে দায়ের করা হয়েছে।

তার দাবি, উল্লেখিত জায়গার জাল দলিল বানানোর ক্ষেত্রে ভূমি কর্মকর্তাদের যোগসাজস রয়েছে। না হলে দি চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি কীভাবে আমাদের পৈতৃক জায়গায় হাত দিল। আর কী ভাবেই একজনের খাজনা দেওয়ার জায়গা জাল দলিল বানিয়ে রেজিস্ট্রি করে দিল। শুধু তাই নয়, আমরা যখন ছদ্দ নামধারী মায়া রাণী নাথের খোঁজে নামি তখনই মামলা নামিয়ে ফেলার জন্য বিবাদিদের পক্ষ থেকে চাপ সৃষ্টিসহ প্রাণনাশের হুমকী শুরু হয়। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। অতি ক্ষমতাধর হওয়ায় সুষ্ঠুভাবে ন্যায় বিচারের জন্য আদালত ও প্রশাসনের কাছে আপনাদের মাধ্যমে সহযোগিতা কামনা করছি। না হয় আমাদের সহযোগিতা করার মতো আর কেউ নেই।

এ সময় মায়া রাণীর বড় মেয়ে কৃষ্ণা নাথ, স্বামী পরিমল নাথ, ছেলে কাজল মহাজন ও শিমুল নাথ উপস্থিত ছিলেন।

-বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক