কোভিড নাইন্টিন ড্যাশবোর্ড প্রক্রিয়া চালু করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু। আর তার মানচিত্রেই দেখা যাচ্ছে, লাদাখ এবং জম্মু-কাশ্মীরকে ভারতের বাইরের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে! ঘটনাটি সামনে আসার পরেই হইচই পড়ে গেছে। এবং জানা গেছে, এমনটা এই প্রথম নয়। সম্প্রতি জেনেভাতে জাতিসংঘের একটি সম্মেলনে, হু-প্রধান ঘেব্রেসিয়াস টেড্রোসের সামনে এই বিষয়টি উত্থাপনও করেছিলেন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত ইন্দ্রমণি পান্ডে। কিন্তু তাতেও বদল হয়নি মানচিত্রের।
কোভিড -১৯ ড্যাশবোর্ডের রঙিন কোভিড মানচিত্র প্রকাশ করেছে হু। তার পরেই আবারও ভারতের ম্যাপের গন্ডগোল দেখে অফিসিয়ালি চিঠি লিখেছেন ভারতের রাষ্ট্রদূত। সর্বোচ্চ স্তরে এই চিঠি পাঠিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, এই প্রথম নয়। এর আগেও একই ভুল করা হয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে। কিন্তু একই ভুল যদি বারবার হতে থাকে, তা তখন আর নিছক ‘ভুল’ থাকে না। সংশয় হয়, এ ভুলের পিছনে কোনও উদ্দেশ্য বা অবহেলা আছে কিনা।
হু-এর মানচিত্র ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে গেছে বিশ্বের নানা প্রান্তে। হু-এর নিজস্ব বিভিন্ন ওয়েব পোর্টালে আপলোড করা হয়েছে মানচিত্র। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলিও ব্যবহার করেছে এই ম্যাপ। তাতে ভারতের সীমানা সম্পর্কে এমন ভুল ধারণা তৈরি করায় ন্যায্যতই অসন্তুষ্ট ভারত। চিঠিতে অনুরোধ করা হয়েছে, ভুলটি যাতে দ্রুত শুধরে নেওয়া হয়। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও উত্তর দেওয়া হয়নি এই চিঠির।
প্রসঙ্গত, ভারতের সীমানা নিয়ে বারবার এই সমস্যা তৈরি করে এসেছে চিনও। নানা সময়ে ভারতের নানা জায়গাকে তারা নিজেদের মানচিত্রে ঢুকিয়ে নিয়েছে। এ নিয়ে বহু দ্বন্দ্ব হলেও তার সমাধান হয়নি কখনও। তার উপর গত বছরের মাঝামাঝি সম থেকে লাদাখ সীমান্তে চিনের আগ্রাসনের চেষ্টা বড় সমস্যা তৈরি করে।
কূটনীতিকরা বলছেন, হু-এর উপর চিনের প্রভাব নিয়ে নানা অভিযোগ আন্তর্জাতিক মহলে রয়েছে। মাস কয়েক আগে করোনা পরিস্থিতি যখন চরমে, তখন চিনের বিরুদ্ধে ক্ষোভের কারণেই হু-এর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন সদ্যপ্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অভিযোগ করেছিসেন, হু-এর নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি চিনের হাতে চলে গিয়েছে। মার্কিন অনুদানও বন্ধ হয়ে দিয়েছে এর পরে।
ভারত হু-এর বিরুদ্ধে সরাসরি এমন কোনও অভিযোগ না জানালেও, মানচিত্রে বারবার এই একই ভুলের পিছনে চিনের নির্দেশে বা কোনও কারসাজি রয়েছে কিনা, সে সন্দেহ থেকেই যায়। তাই এই বিষয়টি নিয়ে এবার কড়া অবস্থান নিয়েছে ভারত। এখন দেখার, চিঠির প্রতিক্রিয়ায় মানচিত্রের ভুল শুধরে নেওয়া হয় কিনা।-বিজনেসটেুডে২৪ ডেস্ক