Home First Lead হোয়াইট হাউস থেকে বিতাড়িত ট্রাম্প

হোয়াইট হাউস থেকে বিতাড়িত ট্রাম্প

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

২০১৯ সালে তিন মাসের জন্য ইমপিচ করা হয়েছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। আর আজ বৃহস্পতিবার মেয়াদ ফুরনোর মাত্র ৬ দিন আগে হোয়াইট হাউস থেকে বিতাড়িত করা হল ট্রাম্পকে। রিপাবলিকান পার্টির ১০ জনের ভোট গেছে ডেমোক্র্যাটদের ঝুলিতে। এখনও অবধি ট্রাম্পকে ইমপিচ করার সপক্ষে ভোট পড়েছে ২৩২-১৯৭। অর্থাৎ মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের ২৩২ জন ট্রাম্পকে ইমপিচ করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। কাজেই মেয়াদ শেষের আগে বিদায়ী প্রেসিডেন্টকে সরিয়ে দিতে আর কোনও সমস্যাই নেই। তবে এখনও আইনি প্রক্রিয়া কিছু বাকি। সে দিকে এগোচ্ছেন সেনেটের সদস্যরা।

গতকাল, বুধবার থেকে মার্কিন কংগ্রেসে ভোটাভুটি শুরু হয়েছে।  ট্রাম্পকে ইমপিচ করা উচিত কি না, সেই বিতর্ক শুরু করেন হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। সেনেটে শুনানি চলছে। জানা গিয়েছে, ট্রাম্প হোয়াইট হাউস ছাড়ার পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষ হবে। ন্যান্সি বলেছেন, “আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়। আমেরিকাও না, প্রেসিডেন্টও না। অন্যায় করলে শাস্তি পেতেই হবে।”

ট্রাম্পের ইমপিচমেন্টের প্রক্রিয়া ঘিরে টালমাটাল আমেরিকা। ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে নজিরবিহীন হিংসার পরে আর কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি মার্কিন প্রশাসন। গতকাল থেকেই ওয়াশিংটনে বাড়তি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। বাইডেনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ঘিরে দেশের সব প্রদেশের রাজধানীতে যে ট্রাম্প-সমর্থকেরা সশস্ত্র তাণ্ডব চালাতে পারে, গতকালই তা নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে এফবিআই। তবে ট্রাম্প নিজেই রাজধানী শহরে ২৪ তারিখ পর্যন্ত জরুরি অবস্থা জারির অনুমতি দিয়েছেন। সমর্থকদের মাথা ঠান্ডা রাখার নির্দেশও দিয়েছেন। ট্রাম্প বলেছেন, “কোনও হিংসা নয়, আইন ভাঙ নয়। আমি চাই আমেরিকাবাসী মাথা ঠান্ডা রেখে পরিস্থিতির মোকাবিলা করুক।”

আমেরিকার ইতিহাসে ট্রাম্প হলেন তৃতীয় প্রেসিডেন্ট যাঁকে ইমপিচ করা হচ্ছে। আমেরিকার সংবিধানে বলা হয়েছে, হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে যদি কোনও প্রেসিডেন্টকে ইমপিচ করা হয়, তা হলেও তিনি নিজের পদে থাকতে পারেন। এরপর সেনেট স্থির করবে পরবর্তী পদক্ষেপ। প্রেসিডেন্ট যদি দেশবিরোধী কাজ করেন, কিংবা অন্য কোনও অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়েন তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব আনা যেতে পারে মার্কিন কংগ্রেসে। এর আগে যে দুই প্রেসিডেন্টকে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ইমপিচ করেছিল, তাঁরা হলেন বিল ক্লিনটন ও অ্যান্ড্রু জনসন। তাঁরা দু’জনেই রেহাই পেয়েছিলেন সেনেটে।

তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যতিক্রমী। তিনি একবার নয়, দু’ বার ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি হচ্ছেন। তাঁর বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানোর গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। তাঁরই উস্কানিতে খোদ ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে চড়াও হয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে ট্রাম্প-সমর্থকরা। সেনেট সদস্যদের ওপর হামলা হয়েছে, গুলি চলেছে, প্রাণও গেছে পাঁচ জনের। আমেরিকার ইতিহাসে এই ঘটনা নজিরবিহীন। এরপরেই ট্রাম্পকে ইমপিচ করার প্রস্তাব জমা পড়েছে মার্কিন কংগ্রেসে।

ট্রাম্পকে ইমপিচ করার প্রক্রিয়া দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের সমর্থন চেয়েছিল ডেমোক্র্যাটরা। পেন্সকে বলা হয়েছিল, সংবিধানের ২৫ তম সংশোধনীর আওতায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব জমা করতে। তবে পেন্স বেঁকে বসেছেন। ট্রাম্পের বিরোধিতা করতে তিনি রাজি নন। ২৫ তম অ্যামেন্ডমেন্টও খারিজ করে দিয়েছেন। ডেমোক্র্যাটিক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, ট্রাম্পকে ইমপিচ করার এই সিদ্ধান্ত দেশ ও জাতীর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। তবে ডেমোক্র্যাটিক স্পিকার ন্যান্সি বলেছেন, “প্রেসিডেন্টের শপথ নিয়ে অন্যায়ভাবে প্রতিশ্রুতি ভেঙেছেন ট্রাম্প। তাই এই ইমপিচমেন্ট দেশ, জাতি ও গণতন্ত্রের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত।”