Home অন্যান্য ১৪ দিনে ২১২৫ কিলোমিটার হেঁটে বাড়ির পথে দম্পতি

১৪ দিনে ২১২৫ কিলোমিটার হেঁটে বাড়ির পথে দম্পতি

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

কলকাতা: দু’বছরের সন্তানকে কোলে নিয়ে পায়ে হেঁটে ২১২৫ কিলোমিটার পারি দিয়ে প্রায় ঘরের কাছাকাছি এসেও মনে হচ্ছিল শেষমেষ পৌঁছতে পারবেন কি বাড়ি পর্যন্ত! ধূপগুড়ি থানার পুলিশের উদ্যোগে অবশেষে বাড়ির পথে কোচবিহারের শ্রমিক দম্পতি।

কোচবিহার জেলার ঘোকসাডাঙা এলাকায় বাসিন্দা মোমিনুর রহমান। বছর খানেক আগে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে মুম্বইতে গিয়েছিলেন কাজের জন্য। সেখানে গিয়ে যা অর্থ উপার্জন হত তাতে তিনজনের চলে যেত বেশ। আচমকাই শুরু হয় লকডাউন। প্রথমে তাঁরা ভাবেন কিছুদিন পরেই উঠে যাবে লকডাউন। আবার স্বাভাবিক হবে পরিস্থিতি। বাস্তবে যা হল, তারজন্য তৈরি ছিলেন না মোটেই।

ক্রমাগত বাড়তে থাকে লকডাউনের মেয়াদ। ওদিকে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় আয়। কী করে ঘর ভাড়া দিয়ে থাকবেন! খাবেনই বা কী! আকাশ ভেঙে পড়ে মাথায়। একসময় না খেয়ে মরার জোগাড় হয় তাঁদের। বাধ্য হয়েই সিদ্ধান্ত নেন ফিরে আসার। মোমিনুর বলেন ‘‘মহারাষ্ট্র পুলিশের কাছে সাহায্য চেয়ে লাভ হয়নি কোনও।তারপরেই বাড়ির দিকে হাঁটা শুরু করি। দুবছরের ছেলেকে কোলে নিয়ে।’’

তিনি জানান ১৪ দিন আগে তাঁরা মহারাষ্ট্র থেকে জাতীয় সড়ক ধরে পায়ে হেঁটে রওনা দেন। হাতে সামান্য পুঁজি। দীর্ঘ পথে বিভিন্ন ক্লাব বা সংগঠন থেকে তাঁদের একাধিকবার খাবার দেওয়া হয়। সেই খাবার খেয়ে, পথের ধারে খানিক বিশ্রাম নিয়ে পথ চলেছেন লাগাতার। এইভাবেই সোমবার মালদহে এসে পৌঁছন তাঁরা। সেখানকার একটি ক্লাবের সদস্যরা তাঁদের দেখে পুলিশের সাহায্য নিয়ে রাতে একটি বাসে চাপিয়ে দেন। সেই বাস মঙ্গলবার ভোর ৩ টে নাগাদ শিলিগুড়িতে এসে পৌঁছয়। এরপর তাঁরা শিলিগুড়ি থেকে ফের হাঁটা শুরু করে মঙ্গলবার বিকেলে ধূপগুড়ি এসে পৌঁছন। আর পা টেনে চলতে পারছিলেন না।স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের পৌঁছে দেন ধুপগুড়ি থানার গেটের সামনে।

পরে ধূপগুড়ি থানার ট্রাফিক ওসি অভিজিৎ সিনহা তাঁদের খাইয়ে দাইয়ে একটি ম্যাটাডোরে চাপিয়ে ঘোকসাডাঙার দিকে রওনা করিয়ে দিলেন। ‘‘এবার হয়তো সত্যি বাড়ি ফিরতে পারব।’’ ম্যাটাডোরে ওঠার আগে বললেন মোমিনুর।