Home Second Lead ২২%পোশাক কারখানায় ইন্সপেকশন হয় না: সিপিডি

২২%পোশাক কারখানায় ইন্সপেকশন হয় না: সিপিডি

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা: প্রায় চার হাজার পোশাক কারখানার মধ্যে এখনও প্রায় ২২ দশমিক ৫ শতাংশ কারখানায় কোন ধরনের ইন্সপেকশন (পরিদর্শন) হয় না। আর পরিদর্শন না হওয়ায় অনেক কারখানা ঝুঁকিপর্ণ রয়ে যায় এবং দুর্ঘটনা ঘটে।

রবিবার (১১ জুলাই)‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেফটি অব দ্য আরএমজি সেক্টর ডিউরিং দ্য পোস্ট-অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্স পিরিয়ড’ শীর্ষক এক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এসব কথা বলেন।

সংলাপটি আয়োজন করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) ও এফইএস।

খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, দেশে তৈরি পোশাক খাতের বাইরে অন্যান্য খাতের শ্রমিকের নিরাপত্তা ও দায়িত্ববোধের অবহেলা রয়েছে। নিরাপত্তা ও দায়িত্ববোধের অবহেলার প্রমাণ হলো নারায়ণগঞ্জে সেজান গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকান্ডে বড় হতাহতের ঘটনা।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবং সিপিডির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর সভাপতিত্বে এ সময় তৈরি পোশাক শিল্পের মালিক ও শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি ছাড়াও উন্নয়ন সহযোগী ও আইএলও’র প্রতিনিধিরা শ্রম খাতে শ্রমিকের নিরাপত্তার বর্তমান অবস্থা এবং এ থেকে উত্তরণে তাদের মতামত তুলে ধরেন।

সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী বলেন, ‘পোশাক খাতে নিরাপত্তার বিষয়ে ক্রেতাদের চাপ থাকে। সেজন্য এখানে নিরাপত্তার বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়। আন্তর্জাতিক চাপ না থাকলে কমপ্লায়েন্স এবং নিরাপত্তায় উন্নতি করব না, তা তো হতে পারে না।’ সিপিডির চেয়ারম্যান প্রফেসর রেহমান সোবহান বলেন, ‘রানা প্লাজার ঘটনা নিরাপত্তা রক্ষার যে শিক্ষা দিয়েছে, পোশাকের বাইরে অন্য খাত সেই শিক্ষা নিয়েছে কি? উত্তর হলো, না।’ বাংলাদেশ নিটওয়ার ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘সেজান কারখানার ঘটনা দেখিয়েছে। আমরা এতদিন পোশাক খাত নিয়েই ভেবেছি, অন্য খাত নিয়ে নয়। এই ঘটনার পর সময় এসেছে পোশাক খাতের বাইরে স্থানীয় অন্য শিল্পের নিরাপত্তার আওতায় আনা। স্থানীয় শিল্পগুলোর ৯০ শতাংশই সেফটির বিষয়ে কনসার্ন নয়।

এ সময় শ্রমিক প্রতিনিধিরা পোশাক খাতসহ অন্য খাতে শ্রম নিরাপত্তায় বিভিন্ন পক্ষের দুর্বলতার চিত্র তুলে ধরেন।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এ আয়োজনে গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘প্রায় চার হাজার পোশাক কারখানার মধ্যে এখনও প্রায় ২২ দশমিক ৫ শতাংশ কারখানা কোন ধরনের ইন্সপেকশনের বাইরে রয়ে গেছে। ২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর পোশাক খাতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের কার্যক্রমের কারণে এ খাতের শ্রম নিরাপত্তায় উন্নতি হয়েছিল। তবে একই সময়ে সরকার গঠিত ন্যাশনাল ইনিশিয়েটিভ ও রেমিডিয়েশন কোঅর্ডিনেশন সেলের (আরসিসি) কার্যক্রমে প্রত্যাশিত অগ্রগতি হয়নি।’

এছাড়া অ্যাকর্ডের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর গঠিত আরএমজি সাসটেইনেবল কাউন্সিলের (আরএসসি) কিছু দুর্বলতাও তিনি তুলে ধরেন।

প্রতিবেদনে তিনি ২০১৮ সালের পূর্ববর্তী তিন বছর ও ২০১৮ সালের পরবর্তী সময়ে পোশাক খাতের দুর্ঘটনার চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘পোশাক খাতে দুর্ঘটনা আবার বিস্তৃত হচ্ছে। দুর্ঘটনায় আহতের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষত আগে অগ্নি দুর্ঘটনার সংখ্যা বেশি হলেও সম্প্রতি দুর্ঘটনায় বৈদ্যুতিক ও কারখানা ভবনের অবকাঠামোগত বিষয়ও যুক্ত হচ্ছে।’

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘অ্যাকর্ড অ্যান্ড অ্যালায়েন্সের উদ্যোগের ফলে পোশাক খাতের অগ্রগতিতে অনেক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি বেশকিছু শিল্প দুর্ঘটনা দেখা দেয়ায় প্রশ্ন উঠেছে, অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের মাধ্যমে অর্জিত অগ্রগতি ধরে রাখতে পারছি কিনা।’

ডিআইএফ ইন্সপেক্টর জেনারেল মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘৯০ লাখ নিবন্ধিত কারখানা, দোকান ও প্রতিষ্ঠানের বাইরে আরও প্রায় সাড়ে চার লাখ প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের বাইরে রয়ে গেছে।’