বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: অফডক মালিকরা বিগড়ে বসেছেন। আকস্মিকভাবে আজ বুধবার সকাল থেকে ১৮টি অফডক রপ্তানি পণ্যভর্তি কন্টেইনার ও খালি কন্টেইনার পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে ৩ শিপিং লাইনের । এতে চরম বিপাকে পড়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানি।সব ডিপোর সামনে রপ্তানি পণ্যের স্তূপ।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশেন বৃহস্পতিবার জরুরি সভা আহ্বান করেছে। এসোসিয়েশন তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে অফডকগুলোর কাজ বন্ধ করে দেয়ার।
শীর্ষস্থানীয় শিপিং লাইন ওরিয়েন্ট ওভারসিজ কন্টেইনার লাইন, মার্সক লাইন এবং ট্রাইডেন্ট শিপিংয়ের রপ্তানি কন্টেইনার পরিবহন ও খালি কন্টেইনার স্থানান্তর সকাল ৮ টা থেকে বন্ধ করে দিয়েছে।
মোট রপ্তানির ২৫ শতাংশ মার্সক লাইনের। ৫ শতাংশ ওরিয়েন্ট ওভারসিজ কন্টেইনার লাইন এবং ট্রাইডেন্ট শিপিং ২ শতাংশ করে। ১৮টি অফডকে লাইন তিনটির কন্টেইনারে রপ্তানি পণ্য ভর্তি বন্ধ রয়েছে। এদের খালি কন্টেইনার স্থানান্তরও বন্ধ। রপ্তানিকারকরা তাদের পণ্য অফডকে পৌঁছে দেন। সেখান থেকে ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার তা গ্রহণ করে আমদানিকারকের পক্ষে এবং শিপমেন্ট হয়।
ট্যারিফ বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছেন অফডক মালিকরা অনেকদিন ধরে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে তা নিয়ে কয়েক দফায় সভা হয়েছে। সভায় বেসরকারি আইসিডি/সিএফএস নীতিমালা-২০১৬ এর ১১নং ধারা অনুসারে গঠিত কমিটি ট্যারিফ পুন:নির্ধারণ করে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়কে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশন জানায়, সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে গত ১ অক্টোবর থেকে ১০ শতাংশ এবং ১ জানুয়ারি থেকে ২২ শতাংশ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। এ প্রেক্ষাপটে গত ৩ ফেব্রুয়ারি নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় যে ট্যারিফ নির্ধারণ নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর কাছে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা পেশ করা হবে। কিন্তু এর আগেই আকস্মিকভাবে অফডক মালিকরা ৩টি শিপিং লাইনের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে সংশ্লিষ্টদের সাথে কোনরূপ আলোচনা ব্যতিরেকে।
শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে বলেছে বর্তমানে বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের কারণে বিরাজমান তীব্র ব্যবসায়িক মন্দার এই দুঃসময়ে বেসরকারি আইসিডি/সিএফএস এর এধরণের কার্যক্রম অনৈতিক ও স্বেচ্ছাচারিতামূলক। এতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে দেশের সুনাম ক্ষুন্ন হবে এবং দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশেন বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় জরুরি সভা আহ্বান করেছে। সেখানে বিস্তারিত আলোচনা করে পরবর্তী কার্যক্রম নেয়া হবে বলে জানিয়েছেনে এসোসিয়েশন চেয়ারম্যান এহসানুল হক চৌধুরী। পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বন্দর চেয়ারম্যানের সাথেও আজ কথা বলেছেন।
অফডক মালিকদের সংগঠন বিকডার চেয়ারম্যান নুরুল কাইয়ূম খানকে কয়েক দফায় ফোন করেও কোন সাড়া মেলেনি। তাই বিকডার সুনির্দিষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, কমপক্ষে ১০ শতাংশ ট্যারিফ বৃদ্ধি চান অফডক মালিকরা। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের সভায় শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশন এর ঘোর বিরোধিতা করেছে। শেষ পর্যন্ত ৫ শতাংশ বৃদ্ধিতে সায় দেয়। তা থেকে ক্ষোভ অফডক মালিকদের। বুধবার সকালে কাজ বন্ধ করে দেয়ার মধ্য দিয়ে সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।