বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতায় ভূমিকা রাখা। এজন্য প্রতিষ্ঠানটি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে। এ বছরের জুন শেষে পুঁজিবাজারে প্রতিষ্ঠানটির মোট বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা। যদিও গত কয়েক বছরে বিভিন্ন কারণে আইসিবির বিনিয়োগ সক্ষমতা কমে গেছে।
গতকাল শনিবার ১৯ ডিসেম্বর ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ২০১৯-২০ হিসাব বছরের আর্থিক ও ব্যবসায়িক পরিসংখ্যান বিনিয়োগকারীদের কাছে তুলে ধরা হয়। ২০১৯-২০ হিসাব বছরে আইসিবি এককভাবে ৪০ কোটি ৯২ লাখ টাকা নিট মুনাফা করেছে। আর সাবসিডিয়ারিসহ সম্মিলিতভাবে প্রতিষ্ঠানটির নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৫৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকায়। আলোচ্য বছরে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে আইসিবি ও সাবসিডিয়ারি কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন পোর্টফোলিওতে মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা। এছাড়া এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটি ৪০০ কোটি টাকার একটি বন্ড ও ৩৫ কোটি টাকার দুটি মিউচুয়াল ফান্ড ইস্যুর ট্রাস্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে।
আইসিবির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. কিসমাতুল আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এজিএমে আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবুল হোসেনসহ অন্য পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় বিপুলসংখ্যক শেয়ারহোল্ডার অংশ নেন। সভায় শেয়ারহোল্ডারদের সামনে আইসিবি এবং সাবসিডিয়ারি কোম্পানিগুলোর ২০১৯-২০ হিসাব বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন এবং নিরীক্ষিত হিসাব বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়। এছাড়া সভায় ২০১৯-২০ হিসাব বছরের জন্য ৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়। এর আগে ২০১৯-২০ হিসাব বছরের জন্য করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত আইসিবি ইউনিট ফান্ড থেকে সার্টিফিকেট প্রতি ৪০ টাকা হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়, যা যেকোনো মিউচুয়াল ফান্ডের তুলনায় সর্বোচ্চ।
সভায় পুঁজিবাজার বিপর্যয়-পরবর্তী বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং বাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আইসিবির ভূমিকার প্রশংসা করেন শেয়ারহোল্ডাররা। পুঁজিবাজারের গভীরতা, স্থিতিশীলতা, নির্ভরযোগ্যতা ও তারল্য বজায় রাখার পাশাপাশি একটি সুদৃঢ় ও টেকসই পুঁজিবাজার গঠনে আইসিবি ও এর সাবসিডিয়ারি কোম্পানিগুলো অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে সভায় অভিমত ব্যক্ত করেন তারা। এছাড়া অব্যাহত সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য শেয়ারহোল্ডার, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ এবং সিডিবিএলসহ সব স্টেকহোল্ডারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আইসিবির পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইসিবির সম্মিলিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪০ পয়সা। যেখানে গত বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ১ টাকা ৭৫ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর করপোরেশনের সম্মিলিত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৫৭ টাকা ২৫ পয়সা। যেখানে ৩০ জুন এনএভিপিএস ছিল ৫৬ টাকা ৮০ পয়সা।